মালদা: ত্রাণের টাকা ‘লোপাট’ সংক্রান্ত মামলা। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে থানায় আত্মসমর্পণ করলেন স্বয়ং ত্রাণ কর্মাধ্যক্ষ। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের দু-সপ্তাহের মধ্যেই থানায় আত্মসমর্পণ করেন মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরের তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির নারী-শিশু ও ত্রাণ কর্মাধ্যক্ষ রোশনারা খাতুন। সোমবার তিনি চাঁচল মহকুমা আদালতে আত্মসমর্পণ করলেন। তবে তাঁর এখনও বক্তব্য, তিনি এই কেলেঙ্কারিতে জড়িত নন। তাকে ফাঁসানো হয়েছে। মাস্টার রোলে তার সই জাল করা হয়েছে। এর পেছেনে কোনও বড় মাথা রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহের শেষে হরিশ্চন্দ্রপুর বন্যার ত্রাণ কেলেঙ্কারির আরেক অভিযুক্ত বড়ই অঞ্চলের তৃণমূল নেতা আফসার হোসেন আত্মসমর্পণ করেন। তিনিও জেরার মুখে জানিয়েছিলেন, দলের বড় বড় রাঘব-বোয়াল এই কেলেঙ্কারির পিছনে রয়েছে। তিনি নির্দোষ, তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি করেন। গত সপ্তাহে তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। বর্তমানে তাঁকে ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকে ২০১৭ সালের বন্যার ক্ষতি-গ্রস্তদের জন্য দুই দফায় ১৩ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ৭০ হাজার এবং আংশিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ৩,৩০০ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু অভিযোগ, এই টাকা প্রকৃত উপভোক্তা না পেয়ে বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতা এবং জন-প্রতিনিধিদের পকেটে গিয়েছে। এর মধ্যে পঞ্চায়েত সমিতি স্তরে ৩ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার মত দুর্নীতির অভিযোগ হয়েছে। এই নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হয়েছে। এই মামলা হাইকোর্ট কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল অব ইন্ডিয়া বা ক্যাগকে (CAG) অডিট করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। পরে হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, তৃণমূলের ব্লক সভাপতি, বড়ুই গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানকে গ্রেফতার করতে হবে। তিন জনকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। প্রধান পালিয়ে যান। পরে আদালতের নির্দেশে পুলিশ সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে তাঁর। এরপর হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন অভিযুক্তরা। সুপ্রিম কোর্ট তাঁদের আবেদন খারিজ করে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয়। তারপরই একে একে আত্মসমর্পণ করেন তাঁরা।