মালদহ: কঙ্কালসার চেহারা, দাঁত-মুখ বেরিয়ে! তাতে প্রলেপ কবে পড়েছে, স্মৃতি হাতড়েও মনে করতে পারছেন না অনেকে। ওই গ্রামের বাসিন্দাদের অবস্থা যে ঠিক কতটা দৈন্য, রাস্তাই তার জ্বলন্ত প্রমাণ। রাস্তা বলা অবশ্য ভুল। আলপথের থেকে কোনও তফাৎ নেই। স্কুল, কলেজ, কাজবাজ, বাজার-এই রাস্তা উজিয়েই চলছে। কিন্তু এ সব তো হল, গ্রামের কেউ অসুস্থ হলেই বাজ ভেঙে পড়ে মাথায়। গ্রামের রাস্তায় যে ঢোকে না অ্যাম্বুলেন্স। ওই খারাপ রাস্তা দিয়ে রোগীকে ভ্যানে কিংবা ছোটো গাড়িতে আনতে হয়। তাতে আরও খারাপ অবস্থা হয়ে যায় রোগীর। সন্তানসম্ভবাদের ক্ষেত্রে তো বিষয়টি আরও জটিল। প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র নিয়ে যেতে চরম অসুবিধার মধ্যে পড়েন গ্রামবাসীরা। অনেকক্ষেত্রে এমনও হয়, ওই রাস্তা উজিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পৌঁছানোর আগেই প্রসব যন্ত্রণা এমন ওঠে, যে রাস্তাতেই প্রসব করে ফেলেন অনেক প্রসূতি। এই রাস্তা মালদহের গাজোলের চাকনগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার। গাজোল ব্লকের দেওতলা থেকে চাকনগর প্রায় ১৭ কিলোমিটার রাস্তা বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, যদিও বিগত ১০ বছর ধরে পঞ্চায়েত বিজেপির দখলে। তবে বিজেপির প্রধানের অভিযোগ, শাসকদল যেহেতু তৃণমূল কংগ্রেস,তাই এলাকায় কোন উন্নয়ন হচ্ছে না। রাস্তার কাজ হোক কিংবা অন্যান্য সংস্কার, কিছুই হচ্ছে না। বহুবার ব্লক প্রশাসন জেলা পরিষদ বলেও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ বিজেপি নেতৃত্বের।
অন্যদিকে গাজোল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পাল্টা দাবি, ইতিমধ্যেই উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পরিষদের এই রাস্তা সংস্কারের জন্য আবেদন পাঠানো হয়েছে। খুব শীঘ্রই এই কাজ করা হবে।
চাকনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের জাজিল পাড়ার গ্রামবাসীরাজানাচ্ছেন বহু বছর ধরে এই রাস্তার সংস্কার হয় না এই অবস্থাতেই রয়েছে। স্কুলে বাচ্চাদেরকে পাঠানো যায় না। কেউ অসুস্থ হলে এমনকি গর্ভবতী মহিলাদেরকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না অ্যাম্বুলেন্স গ্রামে ঢোকে না।
চাকনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি প্রধান দিপু ওঁরাও বলেন, “জেলা পরিষদ থেকে পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূলের দখলে , প্রশাসনের আমলারাও তৃণমূলের কথা শুনছে সে ক্ষেত্রে চাকনগর গ্রাম পঞ্চায়েতটা বিজেপির দখলে রয়েছে সেই জন্যেই তারা এলাকায় কোন কাজ করছে না। এই রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে বেহাল হয়ে পড়ে রয়েছে। আমরা পঞ্চায়েত থেকে বহুবার ব্লক প্রশাসন জেলা প্রশাসন জেলা পরিষদ কে জানিয়েছি কিন্তু তাতেও তাদের কোন ভূমিকা দেখতে পাই নি।”
যদিও বিজেপির প্রধানের এই অভিযোগটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন গাজোল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মোজাম্মেল হোসেন। তিনি বলেন, “রাস্তার সমস্যা রয়েছে । দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার হয় না ঠিকই এতে মানুষের চলাফেরার কষ্ট হচ্ছে । তবে আজকের বিজেপির এমএলএ, বিজেপির এমপি তারা কেন এই রাস্তার কাজ করছে না তাদেরকে এলাকায় দেখা যায় না। আমরা ইতিমধ্যেই এই রাস্তা সংস্কারের জন্য উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রীকে জানিয়েছি, আশা করি খুব শীঘ্রই এই রাস্তার সংসারের কাজ শুরু হবে।”