মালদা: মালদার প্রশাসনিক সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় (Mamata Banerjee) সরব হলেন নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে। বললেন, ‘আমি তো খুশি কয়েকটা ডাকাত গদ্দার আমার দল থেকে বিদায় নিয়েছে। এই ডাকাত গদ্দাররাই এই কাজগুলি করেছিল, পুরুলিয়ার কোটাই কেটে দিয়েছিল। একসময় দেখলাম পুরুলিয়ার ছেলেরা চাকরি পাচ্ছে না।’ সভা থেকেই আদালতের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধ, যাতে এই বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে দেখা হয়। যদিও সরাসরি কারও নাম এদিন মুখ্যমন্ত্রী উচ্চারণ করেননি। তবে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে যখন তোলপাড় গোটা রাজ্য, যখন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী জেলে, তখন মুখ্যমন্ত্রীর মুখে নিয়োগ দুর্নীতি প্রসঙ্গে এমন মন্তব্য যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
মুখ্যমন্ত্রী বললেন, ‘যখন শিক্ষক নিয়োগে ( দুর্নীতির অভিযোগ) হয়েছিল, আমি কোনওদিন কিছু বলিনি। আমার বলা শোভা পায় না। আদালতে কেস চলছে। আমি আশা করি, ভাল বিচার হবে। সাময়িকভাবে কেউ কেউ কাউকে ভুল বুঝতেই পারেন। যদি কেউ অন্যায় করে তার দায়িত্ব আমরা কেউ নেব না।’ এরপরই মুখ্যমন্ত্রীর মুখে উঠে আসে পুরুলিয়া জেলার কথা। তাঁর দাবি, পুরুলিয়ার ছেলেমেয়েদের সম্পূর্ণ বঞ্চিত করা হয়েছিল। কারণ, পুরুলিয়ার কোটা কেউ কেউ নিজের পকেটে ঢুকিয়ে নিয়েছিল বলে অভিযোগ করেন তিনি। বললেন, ‘কীসের বিনিময়ে হয়েছিল, নাই বা বললাম।’
পুরুলিয়ার এই অনিয়মের কথা শোনার পর নিজেই যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করেছিলেন, সেই কথাও এদিন মালদার প্রশাসনিক সভা থেকে জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতার বক্তব্য, তিনি জানতে চেয়েছিলেন কেন পুরুলিয়ার ছেলেমেয়েরা বঞ্চিত হবে? বললেন, ‘সব জেলার কোটা থাকে। পুরুলিয়ার ছেলেমেয়েরা রাস্তায় বসে আন্দোলন করছিল। তারপর আমি উদ্যোগ নিয়ে কোটা বাড়িয়ে তাঁদের ব্যবস্থা করে দিলাম।’ একইসঙ্গে রাজ্যে কর্মসংস্থানের চিত্র যে আগের থেকে অনেক ভাল, সেই কথাও এদিন বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেন তিনি। দেশের সামগ্রিক বেকারত্বের পরিস্থিতির সঙ্গে রাজ্যের তুলনা টেনে বললেন, ‘মনে রাখবেন দেশে বেকারির সংখ্যা সবথেকে বেশি দিল্লির সরকারের আমলে। আমাদের রাজত্বে আমরা বেকারের সংখ্যা ৪০ শতাংশ কমিয়ে দিয়েছি।’ অতীতে বেলপাহাড়িতে মানুষকে ভাতের বদলে পিঁপড়ে খাওয়ার যে দৃশ্য তিনি দেখেছেন, সেখান থেকে আজ যে ঘরে ঘরে বিনা পয়সায় চাল পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে, সেই কথাও এদিন তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী।