Malda: ‘খিচুড়ি নয়, ভাঙন রোধে ব্যবস্থা চাই’, ত্রাণ শিবিরে খাবার মুখে দিলেন না দুর্গতরা
Malda: গঙ্গার ভয়াবহ ভাঙনে দিশেহারা মালদার রতুয়া ১ ব্লকের মহানন্দটোলা ও বিলাইমারি অঞ্চলের একাধিক গ্রামের বাসিন্দারা। নদীর তীব্র স্রোতে মহানন্দটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের কান্তটোলা, শ্রীকান্তটোলা, জিতুটোলা ও মুলিরামটোলার বাসিন্দাদের বাড়িঘর, কৃষিজমি ও বসতভিটে তলিয়ে যাচ্ছে নদীগর্ভে।

মালদহ: তীব্র ভাঙন গঙ্গার। তীব্র ভাঙন মালদার রতুয়ায়। দ্রুত বাড়ি ঘর ভেঙে পালাচ্ছে বহু পরিবার। রতুয়ায় নতুন করে গৃহহারা ৬৫টি পরিবার। প্রশাসনের তরফে ত্রাণ শিবিরে খাওয়ার ব্যবস্থা করলেও ক্ষোভে সেই খাওয়ার বয়কট করল বহু পরিবার। আধিকারিক থেকে শুরু করে জনপ্রতিনিধিরা পরিদর্শনের নামে পিকনিক করতে ভাঙন বিধ্বস্ত এলাকায় যায় বলে অভিযোগ গৃহহীনদের।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বর্ষার সময়, ভাঙনের সময় লোক দেখানো কাজ হয়। ভাঙনের সমস্যার সমাধান হয় না। অন্যদিকে গঙ্গার জল বিপদ সীমার ওপর দিয়ে বইছে। উদ্বেগজনক পরিস্থিতি রতুয়া ১ এবং মানিকচক দুই ব্লকেই। পরিস্থিতি নিয়ে প্রশাসনিক ভবনে আধিকারিক, জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন জেলাশাসক নিতিন সিংহানিয়া। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে বলে জানান তিনি। প্রস্তুত করা হয়েছে ২৪ টি ফ্লাড শেল্টার।
এদিকে গঙ্গার ভয়াবহ ভাঙনে দিশেহারা মালদার রতুয়া ১ ব্লকের মহানন্দটোলা ও বিলাইমারি অঞ্চলের একাধিক গ্রামের বাসিন্দারা। নদীর তীব্র স্রোতে মহানন্দটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের কান্তটোলা, শ্রীকান্তটোলা, জিতুটোলা ও মুলিরামটোলার বাসিন্দাদের বাড়িঘর, কৃষিজমি ও বসতভিটে তলিয়ে যাচ্ছে নদীগর্ভে। কেউ রাতের আঁধারে ঘর ছেড়ে পালাচ্ছেন, কেউ বা দিনের আলোয় নিজের হাতে ভেঙে ফেলছেন তিল তিল করে গড়ে তোলা পাকা দালান। এই কঠিন পরিস্থিতিতে দুর্গতরা ছুটছেন নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে। কেউ বাঁধের উপর, আবার কেউ আত্মীয়দের বাড়িতে।
মুনিরামটোলায় পরিস্থিতি খুব খারাপ। একদিনের মধ্যেই নতুন করে গৃহহারা ৬৫টি পরিবার। প্রশাসনের তরফে মুলিরামটোলায় অস্থায়ী ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। সেখানে দুর্গত মানুষকে রান্না করা খাবার বিশেষ করে খিচুড়ি খাওয়ানোরও বন্দোবস্ত করেছে প্রশাসন। কিন্তু সেদিকে নজর নেই কারও। তীব্র ক্ষোভে সরকারি খাবার মুখে তুলতে নারাজ বহু দুর্গত পরিবার। তৈরি করা খাবার পড়ে থাকল ত্রাণ শিবিরে।
ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেওয়া সাধারণ মানুষের বক্তব্য, খাবার খেয়ে কী হবে। সরকার গঙ্গার ভাঙন রোধ করুক, অবিলম্বে পুনর্বাসনের স্থায়ী ব্যবস্থা করুক। কারণ, গৃহহীন মানুষজনের কাছে অস্থায়ী শিবিরে থাকা কোনও স্থায়ী সমাধান নয়। নদী গ্রামের দিকে এগিয়ে আসায় ঘরবাড়ি তো বটেই, এলাকার সুপ্রাচীন কালীমন্দিরের অস্তিত্বও এখন বিপন্ন৷ ১০ থেকে ১২ মিটার মাত্র দূরে মনিরামটোলার প্রাচীন কালী মন্দির। পরিস্থিতি মোকাবিলায় যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ শুরু করে দিয়েছে সেচ দফতর৷ কিন্তু বর্ষার সময় কাজ? বর্ষার আগে নয় কেন? প্রশ্ন গ্রামবাসীদের। পাশাপাশি সেচ দফতরের কাজের মান নিয়েও একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তাঁরা।

