মালদা : শনিবার দুপুরে ভয়ঙ্কর পথ দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে মালদায়। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, ৭২ জন পড়ুয়াকে নিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নয়ানজুলিতে গিয়ে পড়েছে স্কুলবাস। বৃষ্টি সেভাবে না হওয়ার কারণে, নয়ানজুলি সেভাবে জল ছিল না। ফলে, দ্রুত পড়ুয়াদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এখনও পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৭ জন পড়ুয়াকে মালদা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৬-৭ জনের অবস্থা গুরুতর বলে জানা গিয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া পড়ুয়াদের সিটি স্ক্যান করা হচ্ছে। এদিকে দুর্ঘটনার পর থেকেই চালক এবং তাঁর সহকারির কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। দুর্ঘটনায় কম-বেশি প্রায় সব পড়ুয়াই চোট পেয়েছে। হাসপাতালে এক পড়ুয়া জানিয়েছে, ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সব পড়ুয়ারাই গাড়িতে ছিল।
এদিকে এই দুর্ঘটনার পর থেকে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠে আসছে। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে স্কুলের এই বাসটি চলে আসছে। ‘কার ইনফো’ পোর্টালে বাসটির নম্বর দিলে দেখা যাচ্ছে, এই বাসটি আটের দশকের মাঝামাঝি সময়ের। ১৯৮৬ সালে নম্বরটির রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছিল। তারপর থেকে ৩৬ বছর ৩ মাস ধরে বাসটি চলছে। পোর্টালের তথ্য অনুযায়ী, গাড়িটির ফিটনেস রয়েছে ২০২২ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত। তবে পলিউশন সার্টিফিকেটের মেয়াদ চলতি বছরের ২৬ মার্চ শেষ হয়ে গিয়েছিল বলে দেখা যাচ্ছে ওই পোর্টালে। যদিও সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, ২০ বছরের বেশি বয়সের কোনও গাড়ি রাস্তায় নামতে পারে না। এদিকে বাসটি নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করা হত কি না, সেই বিষয়টি নিয়েও বেশ কিছু প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
জানা যাচ্ছে, বাসটি পরিবর্তন করে নতুন বাস আনার কথাও একাধিকবার বলা হয়েছিল। সূত্রের খবর, কর্তৃপক্ষও চিন্তাভাবনা করছিল নতুন বাসা আনার। কিন্তু, সেই চিন্তাভাবনার মধ্যেই আরও অনেকগুলি দিন কেটে যায় এবং এই পুরনো বাসটিই পথে চলে আসছিল। কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের এক স্কুল শিক্ষক দেবব্রত দাস জানিয়েছেন, “কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের কোনও নিজস্ব বাস থাকে না। রেলের থেকে বাস দেওয়া হয়েছিল।” বাসে পড়ুয়ার সংখ্যা বেশি ছিল কি না সেই বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। বাসের কী অবস্থা ছিল, কীরকম গতিতে যাচ্ছিল, সেই সব দিকগুলিও খতিয়ে দেখা হবে।