মালদা: প্রতিদিন ওরা স্বপ্ন দেখে। স্বপ্ন দেখে নতুন ভোরের। স্বপ্ন দেখে ভালো মানুষ হওয়ার,বড় ডাক্তার হওয়ার। কিন্তু অত অর্থ কোথায় যে পড়াশোনা চালাবে? এই প্রশ্ন যখন মনের মধ্যে উঁকি দিত তখন কিন্তু ভয়ে পিছু পা হয়নি ওরা। শত অভাবের মধ্যেও চালিয়ে গিয়েছে নিজেদের পড়াশোনা। তাই হয়ত কোনও বাধাই আর তাঁদের পথ আটকাতে পারেনি। নিট পরীক্ষায় (NEET Exam) র্যাঙ্ক করল জেলার দুই ছেলে।
একজন চা বিক্রেতার ছেলে ও অন্যজন ফল বিক্রেতার ছেলে। চরম দারিদ্র্যর মধ্যে বাবাকে সাহায্য করতে -করতে দু’জনই পড়াশোনার পাশাপাশি কখনো চা বিক্রি করেছে কখনও ফল বিক্রি করেছে। আজ দু’জনের জন্যেই গর্বিত দুই গ্রামের মানুষ। বিভিন্ন সংগঠন, রাজনৈতিক দলের নেতারা তাঁদের সংবর্ধনাও দিয়েছে।
মালদার (Malda) গাজোল ব্লকের মসজিদ পাড়ার ছাত্র ইনজামামুল হক। তাঁর বাবা আনওয়ারুল হক চা বিক্রি করেন। অন্যজন হরিশ্চন্দ্র পুর ১ ব্লকের মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ভবানীপুর গ্রামের সাবির আলি। তাঁর বাবা শেখ সোলেমান। তিনি রাস্তার ধারে ফল বিক্রি করেন। সাবির আলির প্রাপ্ত নম্বর ৬২৬। নিটে র্যাঙ্ক ৯৫২৬। অন্যদিকে ইনজামামুল হক পেয়েছে ৫৮৫। নিটে তাঁর র্যাঙ্ক ১৪২৫০।
গাজোল ব্লকের গাজোল মসজিদপাড়া এলাকার ছাত্র ইনজামামুল হক । তাঁকে সংবর্ধনা জানাতে ছুটে আসেন পাড়া পতিবেশি ও বন্ধু বান্ধবেরা । আর্থিক প্রতিবন্ধকতাকে হার মানিয়ে ইনজামামুল সাফল্যে গর্বিত পরিবার সহ গোটা গ্রাম।সংসারে রয়েছে স্ত্রী আর দুই ছেলে। অভাবের সংসারে চা বিক্রি করে কঠোর পরিশ্রম করে ছেলেকে পড়াশোনা করিয়েছেন তিনি। সোমবার সর্বভারতীয় ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষা নিটের ফলাফল প্রকাশিত হতেই আনন্দের জোয়ার ইনজামামুল হক এর ঘরে। ছেলের সাফল্যে আপ্লুত বাবা ও মা ।
হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নং ব্লকের মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ভবানীপুর গ্রামের বাসিন্দা শেখ সলেমানের ছেলে সাবির আলিকে সংবর্ধনা জানাতে আসেন একের পর এক রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা। মিষ্টিমুখের মধ্য দিয়ে সাবিরকে ফুলের তোড়া,কলম ও ডায়েরি দিয়ে সংবর্ধনা জানালেন ডিওয়াইএফআই এর প্রাক্তন ও নতুন সদস্যরা। ফল বিক্রি করে অভাবের সংসার চালান বাবা শেখ সলেমান। আর্থিক প্রতিবন্ধকতাকে হার মানিয়ে সাবিরের সাফল্যে গর্বিত পরিবার সহ গোটা গ্রাম।
প্রসঙ্গত, ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি কাম এনট্রান্স টেস্ট (NEET) ইউজি-এর ফল প্রকাশিত হয়েছে সদ্য। সেই নিট ইউজি পরীক্ষায় রাজ্যের মধ্যে প্রথম হলেন বাঁকুড়া জেলার বাসিন্দা সৌম্যদীপ হালদার (Soumyadwip Halder)। সোমবার রাতে সর্বভারতীয় এই পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। বাঁকুড়ার সোনামুখীর শ্যামবাজারের ছাত্র সৌম্যদীপ হালদার সেই পরীক্ষায় রাজ্যে প্রথম এবং সারা ভারতে ১৯ তম স্থান অধিকার করেছে। এমন খবরে খুশির হাওয়া জেলা শিক্ষা মহলে।
আরও পড়ুন: NEET UG: নিট ইউজি পরীক্ষায় রাজ্যে প্রথম বাঁকুড়ার সৌম্যদীপ হালদার, জেলার শিক্ষা মহলে খুশির হাওয়া