মালদহ: এক ইউনিট রক্তের দাম ৫ হাজার টাকা। অতিমারির মালদহে (Maldah) রক্তের কালোবাজারির রমরমা। এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার মালদহ ব্লাড ব্যাঙ্কের এক কর্মী-সহ মোট তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
করোনা আবহে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তীব্র রক্তসঙ্কট। অভিযোগ, রক্ত না পেয়ে প্রাণ সংশয় দেখা দিচ্ছে বহু রোগীর। অথচ এরই মধ্যে পাল্লা দিয়ে চলছে কালোবাজারি। মাত্রাতিরিক্ত দামে রক্ত বিক্রি করছে এক শ্রেণির অসাধু চক্র। মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রিন্সিপ্যাল পার্থপ্রতিম বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তাঁর কানেও এরকম খবর এসেছে। তিনিও খোঁজ খবর শুরু করেছেন। পার্থপ্রতিমবাবুর বক্তব্য, “এই ঘটনা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। অভিযোগ খতিয়ে দেখছি। যা ব্যবস্থা নেওয়ার নিচ্ছি।” তবে ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্মীরা যুক্ত তা মানতে চাননি পার্থপ্রতিমবাবু। এ অভিযোগ তদন্তসাপেক্ষ বলেই দাবি তাঁর।
যদিও রোগীর পরিবারগুলির অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সবটাই জানে। কিন্তু তারা কোনও ব্যবস্থা নেয় না। সেই প্রশ্রয়েই এ ভাবে রক্তের দালালচক্র মাথা চাড়া দিচ্ছে। মানুষের দুর্দিনে সর্বস্ব শুষে নিচ্ছে। সূত্রের খবর, এ হাসপাতালে বহু থ্যালাসেমিয়া রোগী আসেন, যাঁরা দীর্ঘদিন ধরেই রক্ত পাচ্ছেন না। এমনকী এমার্জেন্সিতেও রোগীদের রক্তসঙ্কটে ভুগতে হয়। বিরাট অঙ্কের টাকা খরচ করলে তবে রক্ত পাওয়া যায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে লিখিত ও মৌখিক ভাবে জানিয়েও কাজ হয় না বলেই দাবি রোগীর আত্মীয়দের।
এবার মালদহ পুলিশ বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসায় হইচই পড়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের নাম সুজিত রায় (৪৫), মলয় কুণ্ডু (৪৪) ও দেবব্রত দত্ত (৪৫)। সুজিতের বাড়ি মালদহ শহরের পুরাটুলি এলাকায়। বাকি দু’জন ২ নম্বর গভর্মেন্ট কলোনির বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার সকালে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক সংলগ্ন এলাকা থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়।
আরও পড়ুন: ‘সাংসদ হয়েছেন, এতদিন আসেননি কেন’, বিক্ষোভের মুখে বিজেপি নেত্রী লকেট
মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যে ব্লাড ব্যাঙ্কটি রয়েছে, সেটিই জেলার মুখ্য ব্লাড ব্যাঙ্ক। এখান থেকেই প্রয়োজন মত হাসপাতাল, নার্সিংহোমগুলি রক্ত নিয়ে যায়। চাঁচল, হরিশচন্দ্র, সুজাপুর, কালিয়াচক-সরকারি হাসপাতাল থেকে বেসরকারি নার্সিংহোম সর্বত্রই এই চক্রের এজেন্টরা ছড়িয়ে আছে বলে অভিযোগ। আর বিভীষণ রয়েছে ঘরেই। এই ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্মীদের একাংশ যে এ ধরনের অসাধু চক্রে মদত দেয় বৃহস্পতিবারের ঘটনায় সেই অভিযোগই সামনে এল। যদিও বিষয়টি তদন্তসাপেক্ষ বলে মনে করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।