AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Malda: মালদহ মেডিক্যালের মর্গে মৃতদেহের স্তূপ, মাসের পর মাস পড়ে বেওয়ারিশ লাশ, উঠছে ভয়ঙ্কর অভিযোগ

Unclaimed dead bodies in Morgue: দফন কফন কার্য সমিতির সম্পাদক হক জাফর ইমাম বলেন, "একেবারের পচাগলা দেহ দেওয়া হয়। আপনি তো পরীক্ষা করে বুঝতেই পারবেন না, কোন অঙ্গ রয়েছে, আর কোন অঙ্গ নেই। আমাদের অত সময় নেই, বেওয়ারিশ লাশগুলোকে খুলে দেখা। অঙ্গ পাচারের সম্ভাবনা অবশ্যই আছে। হতেই পারে।"

Malda: মালদহ মেডিক্যালের মর্গে মৃতদেহের স্তূপ, মাসের পর মাস পড়ে বেওয়ারিশ লাশ, উঠছে ভয়ঙ্কর অভিযোগ
ফাইল ফোটোImage Credit: TV9 Bangla
| Edited By: | Updated on: Nov 01, 2025 | 11:07 AM
Share

মালদহ: মর্গে পড়ে রয়েছে মৃতদেহ। অবশ্য মৃতদেহের স্তূপ বলাই ভাল। এক-দু’দিন নয়, মাসের পর মাস মৃতদেহ ফেলে রাখা হচ্ছে বলে অভিযোগ। মৃতদেহগুলির কোনও দাবিদার নেই। বেওয়ারিশ লাশ বলেই কি ফেলে রাখা হচ্ছে? মালদহ মেডিক্যাল কলেজের মর্গে মাসের পর মাস এভাবে বেওয়ারিশ লাশ ফেলে রাখা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। শুধু তাই নয়, মৃতদেহ থেকে অঙ্গ পাচার হচ্ছে কি না, সেই প্রশ্নও উঠেছে। এই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।

সপ্তাহখানেক আগেও মালদহ মেডিক্যাল কলেজের মর্গে প্রায় ৬০টি মৃতদেহ ছিল। দীর্ঘদিন ধরে সেইসব বেওয়ারিশ লাশ রয়েছে বলে অভিযোগ। মৃতদেহগুলি সৎকার করে বিবিগ্রাম দফন কফন কার্য সমিতির। সৎকারের জন্য দেহ প্রতি রাজ্য সরকার দেয় মাত্র ৭৪ টাকা। সেই টাকায় কী হবে? প্রশ্ন তুলছে ওই সমিতি। তাদের বক্তব্য, দেহ সৎকারের জন্য খরচ অন্তত হাজার পাঁচেক টাকা। শুধু তাই নয়, ইচ্ছে করে দেহগুলিকে বহু মাস এমনকি দেড় বছর, দু’বছর ধরে ফেলে রেখে একরকম পচাগলা অবস্থায় দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। মৃতদেহ থেকে অঙ্গ পাচার হয় কি না, সেই প্রশ্নও উঠেছে।

দফন কফন কার্য সমিতির সম্পাদক হক জাফর ইমাম বলেন, “একেবারের পচাগলা দেহ দেওয়া হয়। আপনি তো পরীক্ষা করে বুঝতেই পারবেন না, কোন অঙ্গ রয়েছে, আর কোন অঙ্গ নেই। আমাদের অত সময় নেই, বেওয়ারিশ লাশগুলোকে খুলে দেখা। অঙ্গ পাচারের সম্ভাবনা অবশ্যই আছে। হতেই পারে।” তিনি বলেন, “আমাকে একটা দেহ সৎকারের জন্য রাজ্য সরকার ৭৪ টাকা দেয়। এতে একটা বাঁশও হয় না। আমার খরচ হয় পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা।” বেওয়ারিশ বলেই কি অবজ্ঞা? প্রশ্ন উঠছে।

অঙ্গ পাচারের অভিযোগ খারিজ করলেন মর্গে ইন্সট্রাক্টর দীপঙ্কর ঝা। তিনি বলেন, “যিনি বলছেন, তিনি ভুল বার্তা দিচ্ছেন। আমাদের কাছে এমন কোনও খবর নেই। মরা মানুষের অঙ্গ কাজে লাগে না।”

তিনি অস্বীকার করলেও মৃতদেহের অঙ্গ পাচারের অভিযোগ এর আগেও অনেক জায়গায় উঠেছে। আমেরিকার হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের মর্গের প্রাক্তন ম্যানেজার সেড্রিক লজ। তাঁর বিরুদ্ধে মৃতদেহের অঙ্গ চুরির অভিযোগ উঠেছিল। ২০২৩ সালে এই নিয়ে তোলপাড় পড়েছিল বিশ্বে। মৃতদেহ থেকে মস্তিষ্ক, চামড়া, হাড় ও অন্যান্য অঙ্গ চুরি করে অনলাইনে বেচতেন তিনি। আমেরিকা কেন, এই বাংলাতেও মর্গ থেকে মৃতদেহ পাচারের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। ২০২৩ সালের নভেম্বর বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের মর্গ থেকে মৃতদেহ পাচার করতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিলেন ৭ জন। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মর্গ থেকেও মৃতদেহের অঙ্গ পাচারের গুরুতর অভিযোগ উঠেছিল।

মালদহ মেডিক্যালে মর্গে দীর্ঘদিন বেওয়ারিশ লাশ পড়ে থাকা নিয়ে সরব হয়েছে গেরুয়া শিবির। বিজেপির মালদহ দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অজয় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “গোটা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে মৃতদেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রি হয়ে যায়। এর একটা আন্তর্জাতিক চক্র রয়েছে। আগেও দেখা গিয়েছে, কলকাতা-সহ বিভিন্ন জেলার মর্গ থেকে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বাংলাদেশে চলে যাচ্ছে।”

বেওয়ারিশ লাশ দীর্ঘদিন মর্গে পড়ে থাকা নিয়ে সরব হয়েছে কংগ্রেসও। হরিশ্চন্দ্রপুরের প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক মুস্তাক আলম বলেন, “ময়নাতদন্তের পর মৃতদেহ মর্গে রাখা হয়। কিন্তু, আমার প্রশ্ন, মর্গে বেওয়ারিশ লাশ কতদিন রাখা যেতে পারে? বড়জোর কয়েকমাস হতে পারে। কেন দেড়-দু’বছর বেওয়ারিশ লাশ ফেলে রাখা হবে?আর মৃতদেহ সৎকারের জন্য ৭৪ টাকা দেওয়া হয়। কিডনি বিক্রির উদ্দেশ্য রয়েছে, নাকি অন্য কোনও কারণ, জেলাশাসককে বলব বিষয়টি দেখার জন্য।”

তৃণমূল পরিচালিত মালদহ জেলা পরিষদের সহসভাপতি এটিএম রফিকুল হোসেন অবশ্য বলেন, “একটা দুটো দেহ দেরিতে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পেয়েছি। দেরিতে দেহ দেওয়া হচ্ছে কেন, সেটা আমরা দেখছি। আর সমব্যথী প্রকল্পে ২০০০ টাকা দেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে সেটা লাগু করা যায় কি না, সেটা দেখছি।”