মালদহ: মেয়ের চাকরি হবে বলে টাকা দিয়েছিলেন কৃষক বাবা। আড়াই বছর হয়ে গেলেও মেলেনি চাকরি। অভিযোগ, এখন টাকাও ফেরাচ্ছেন না হরিশচন্দ্রপুরের (Harishchandrapur) বাসিন্দা তথা আইসিডিএস হেল্পার হিসাবে কাজ করা মোসলেমা বেওয়া এবং তাঁর মেয়ে পুতুল। ওই কৃষকের অভিযোগ, ৪ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন মোসলেমা। এখন টাকা চাইতেই ফাঁসিয়ে দেওয়ার কথা বলছেন। যদিও পাল্টা মোসলেমা বেওয়ার দাবি, মিথ্যা কথা বলছেন ওই ব্যক্তি। বরং তিনিই জাহেদুল ইসলাম নামে ওই ব্যক্তির কাছে টাকা পান। এদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে জাহেদুল ইসলাম হরিশচন্দ্রপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। জাহেদুলের অভিযোগ, হরিশচন্দ্রপুর সংগঠনপাড়ার বাসিন্দা মোসলেমা বেওয়া ও তাঁর মেয়ে পুতুলন্নেসা পারভিন জাহেদুলের মেয়ে নুরজাহানকে আইসিডিএসে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। বদলে ৪ লক্ষ টাকা চান।
জাহেদুলের কথায়, স্ত্রীর গয়না বন্ধক রেখে, জমি বিক্রি করে মেয়ের চাকরির জন্য ৪ লক্ষ টাকা দেন। এদিকে এখন টাকা ফেরত চাইতে গেলে ঘাড় ধাক্কা থেকে হচ্ছে তাঁকে। এরপরই পুলিশের দ্বারস্থ হন হরিশচন্দ্রপুর থানার মহেন্দ্রপুর গ্রামপঞ্চায়েতের মহেন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা জাহেদুল। জাহেদুল ইসলাম বলেন, “আমার কাছ থেকে ৪ লক্ষ টাকা নিয়েছিল মা-মেয়ে। বলেছিল, চাকরি সব ওদেরই হাতে। আমার মেয়েকে চাকরি দেবে। ১৫ দিনের মধ্যে চাকরি দেবে বলে ২ বছর আগে টাকা নেয়। আজও চাকরি হয়নি। টাকা ফেরত চাইলে এখন সেটাও দিচ্ছে না। অথচ আগে বলছিল টাকা দেবে। এমনকী ভিটেমাটি বিক্রি করে টাকা দেবে বলেছিল। আমাকে বলেছিল, কাউকে যেন না বলি। এখন ১৫ তারিখ আমার মেয়ের বিয়ে। এখন টাকা লাগবে বলে চাইতে গেলে বাড়িতে থাকছে না ওরা। আজ ধরলাম। রাস্তায় বলেছি বলে এখন বলছে টাকা দেবে না। উল্টে ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে।”
যদিও পুতুলন্নেসা পারভিন বলেন, “আমার কাছে টাকা পায় না। মেয়ের বিয়ের জন্য ধার চেয়েছিল। এর আগেও ২-৪ বার টাকা ধার দিই। এখন মেয়ের বিয়ে দেবে। সেই টাকা জোগাড় করতে পারেনি বলে আমার উপর এত রাগ। আমি বলেছিলাম, তোর মেয়ের বিয়ে তো আমার মেয়ের বিয়ের মতোই। কোনওদিন আমার দরকার হলে, আমাকেও সাহায্য করিস। একটা ফ্রিজও চেয়েছিল। বলেছিলাম দেবো। আমি ওর থেকে কোনও টাকাই নিইনি। এখন এসব বলছে।” নিয়োগ থেকে আবাস, বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে যখন বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ উঠছে, হরিশচন্দ্রপুরের ঘটনা নতুন করে শোরগোল ফেলছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।