মালদহ: মুর্শিদাবাদে মেসের বাইরে কলেজ ছাত্রী খুনের ঘটনায় এবার নতুন তথ্য সামনে উঠে এল। সেই তথ্যের জানান দিলেন নিহত সুতপা চৌধুরীর বাবা। এই ঘটনার পর সপ্তাহ ঘুরে গিয়েছে। এতদিন পর সুতপার বাবা দাবি করলেন, ২০১৭ সালে ইংরেজবাজার মহিলা থানায় অভিযুক্ত সুশান্ত চৌধুরীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন তিনি। কিন্তু কেন? পুলিশ সূত্রে খবর, সুতপার বাবা স্বাধীন চৌধুরীর দাবি, নিয়মিত তাঁর মেয়েকে উত্যক্ত করতেন সুশান্ত। সে কারণেই থানায় যান। যদিও এরপরও সুশান্ত সুতপাকে বিরক্ত করতেন। তবে স্বাধীনবাবু দ্বিতীয়বার আর থানায় যাননি। এখন স্বাধীন চৌধুরীর আফশোস, পুলিশকে বিষয়টি জানালে তাঁর মেয়ের এই পরিণতি হত না।
গত ২ মে বহরমপুরে এক ছাত্রীকে এলোপাথাড়ি কোপ মেরে খুনের অভিযোগ ওঠে। ভরসন্ধ্যায় এলাকার গোরাবাজারে সুতপা চৌধুরী নামে ওই ছাত্রীকে কোপানো হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও শেষ রক্ষা হয়নি। বহরমপুর গার্লস কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী সুতপা মেসে থাকতেন। সেই মেসের বাইরেই তাঁকে মারা হয় বলে অভিযোগ।
তদন্ত যত এগোয়, একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে। জানা যায়, সুশান্ত প্রেমে ব্যর্থ হয়ে সুতপাকে মারতে ছক কষেছিলেন। এই কাণ্ড ঘটাবেন বলে পনেরো দিন আগেই বহরমপুরে চলে যান। গোরাবাজারের জাহান বক্স লেনের একটি মেসবাড়িতে ওঠেন। সেখান থেকেই ‘মাস্টার প্ল্যান’।
অভিযোগ, সুতপাকে মারতে বন্দুকের পাশাপাশি ছুরিও কিনেছিলেন সুশান্ত। সেটি কোথা থেকে কিনেছিলেন তা জানতে বৃহস্পতিবার সুশান্তকে মালদহে নিয়ে যায় পুলিশ। ইংরেজবাজার থানায় টানা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর সুশান্তকে সঙ্গে নিয়ে ইংরেজবাজার ও বহরমপুর পুলিশ যায় শহরের নেতাজি মার্কেটে। পুলিশ সূত্রে খবর, সেখানেই একটি দোকান দেখান নির্বিকার সুশান্ত। জানান, ওই দোকান থেকেই ছুরি কিনেছিলেন।
পুলিশ নেতাজি মার্কেট ব্যবসায়ী সংগঠনের সম্পাদকের সঙ্গে কথাও বলে। নির্দিষ্ট দোকান বন্ধ থাকায় তার মালিককে থানায় ডেকে পাঠানো হয়েছে। তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। পাশাপাশি সুশান্ত চৌধুরীকে নিয়ে যাওয়া হয় সুতপার বাড়ি এয়ারভিউ কমপ্লেক্স এলাকায়।