মালদহ: গত কয়েকদিন ধরে এলাকায় লাগাতার হয়েছে বোমাবাজি, চলেছে গুলিও। এমনকি জোট প্রার্থীকে অপহরণেরও অভিযোগ উঠছিল। ভয়ে গ্রামের প্রত্যেকটা পরিবারের পুরুষ ঘর ছাড়া। স্থানীয় বাসিন্দারাই বলছেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী গ্রামে এসেছিল বটে। কিন্তু একবার গ্রাম ঘুরেই চলে গিয়েছে। কখনও বা দেখা যাচ্ছে হাতে গোনা পুলিশ কর্মীরা। তাঁরাও এলাকা কয়েকবার ঘুরে দেখে গিয়েছে বটে। তবে সেরকম কোনও ধরপাকড় নেই। বাড়ির পুরুষরা ঘরছাড়া। ভয়ে ঘর থেকে বের হতে পারছেন না মহিলারা। এমনকি প্রার্থীরাও এলাকাছাড়া। আতঙ্কে দিন কাটছে মালদার মানিকচকের গোপালপুরের বালুটোলা গ্রামের বাসিন্দাদের। রাত পোহালেই ভোট। স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কে, আদৌ তাঁরা প্রাণে বাঁচবেন নাকি ভোট দিতে যাবেন। ভোট দিলে কি তাঁদের প্রাণসংশয় হতে পারে? আতঙ্কে গোটা গ্রাম।
গ্রামের এই মহিলা বলেন, “আমাদের গ্রামে ঝামেলাটা খুবই হচ্ছে। বোমাবাজি হচ্ছে। বাড়ির লোকগুলো ঘরছাড়া। কী করে যাব ভোট দিতে যেতে? আমরা আতঙ্কে রয়েছি।”
গ্রামের অন্য এক মহিলা বলেন, “কেন্দ্রীয় বাহিনীকে একবারই গ্রামে ঘুরতে দেখলাম। কিন্তু আমাদের এখানে ১৩ টা বুথ রয়েছে। তবে গোটা এলাকায় প্রায়শই বোমাবাজি হচ্ছে। বাড়ির পুরুষরা তো কেউ ঘরে নেই। কার সঙ্গে ভোট দিতে যাব? ”
একই পরিস্থিতি পরাণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চাঁদপুর গ্রাম। বৃহস্পতিবার রাতেও গ্রামে কয়েক রাউন্ড গুলি চলেছে। রাতভর বোমাবাজি হয়েছে এলাকায়। হয়েছে ইট বৃষ্টিও। সকালেও এলাকায় গিয়ে দেখা গিয়েছে, গুলির খোল, কার্তুজ পড়ে রয়েছে গ্রামের রাস্তায়। জোট কর্মীর বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। ৮ জন জোটকর্মীকে মারধর করা হয়েছে। তাঁরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
তবে এদিন এই খবর পাওয়ার পর চাঁদপুর গ্রামে টহল দিতে শুরু করেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে মালদহের প্রত্যন্ত গ্রামের এই বাসিন্দারা। প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নতুন ফর্মুলা জারি হয়েছে। জারি হয়েছে নির্দেশিকা। বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে স্পর্শকাতর বুথগুলিতে। আর এই নতুন নির্দেশিকার ফলে রাজ্যের অনেক বুথে ভোট হবে কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়াই। রাত পোহালেই ভোট। এই পরিস্থিতি এই গ্রামগুলিতে কী হবে, সেটাই দেখার।