মালদহ: জাতীয় সড়কের ধারে নয়ানজুলি থেকে এক যুবকের ক্ষতবিক্ষত, অ্যাসিডে পোড়ানো দেহ উদ্ধার হল রবিবার। এই ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বৈষ্ণবনগর থানা এলাকায়। শনিবার থেকে নিখোঁজ ছিলেন ওই ব্যক্তি। এরপরই রবিবার বেলা ১২টা নাগাদ তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। পরিবারের লোকজন জানান, দুই হাত, মুখ অ্যাসিডে পুড়ে কালো হয়ে গিয়েছিল। হাতে ক্ষতচিহ্ন। মুখের অবস্থা বিকট। এই দৃশ্য দেখে কান্নায় ভেঙে পড়ে গোটা পরিবার। খবর দেওয়া হয় বৈষ্ণবনগর থানায়। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। বৈষ্ণবনগর থানা এলাকার ঘোষানিমোড়ের পাশের নয়ানজুলিতে দেহটি পাওয়া যায় এদিন।
জানা গিয়েছে, নিহত ওই যুবকের নাম গঙ্গা ঘোষ। বয়স ৩৮ বছর। গঙ্গা কখনও হোটেলে কাজ করতেন, কখনও আবার গাড়ি চালাতেন। বাড়িতে মা, স্ত্রী, দুই সন্তান রয়েছেন। শনিবার সকালে বাড়ি থেকে বেরোলেও রাত পার করেও ঘরে ফেরেননি গঙ্গা। বাড়ির লোকজন খোঁজখবর শুরু করেন। চারদিকে খবর দেওয়া হয়। এরইমধ্যে সকালে বাড়িতে তাঁর দেহ উদ্ধারের খবর আসে।
গঙ্গার মায়ের কথায়, “ছেলে শনিবার সকাল ৮টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরোয়। বলল কী কাজ আছে একটা। আমি আবার মেয়ের বাড়িতে গিয়েছিলাম। যাওয়ার আগে ছেলের জন্য ভাত রান্না করে রেখে যাই। ও কাজ থেকে ফিরে এসে খাবে। রাতে আমি মেয়ের বাড়িতেই ছিলাম। আমার ছেলেটার জন্য ভাত রান্না করে রাখলাম, ছেলেটা আর ফিরল না। চিরকালের মতো চলে গেল। আমরা আজ বেলা ১২টায় জানতে পারি। ছেলেটার আমার সারা গা পুড়িয়ে দিয়েছে অ্যাসিড ঢেলে। চোখ মুখের কী বীভৎস অবস্থা। আমার ছেলেটাকে মেরে ফেলল।”
স্থানীয়রা জানান, গঙ্গার এলাকার সকলের সঙ্গেই সুসম্পর্ক ছিল। সেভাবে কারও সঙ্গে কোনও ঝামলাও কোনওদিন নজরে আসেনি। কে বা কারা এই অবস্থা করল, নেপথ্যে লুকিয়ে কী কারণ, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে। গঙ্গার বৌদি জানান, “আমরা সকালে তখন রান্নাবান্না করছিলাম। একজন এসে বলল গঙ্গা মরে পড়ে আছে। তাড়াতাড়ি ছুটে গেলাম। আমি ওর বড় বৌদি। আমি আর ওর বড়দা ছুটে যাই। পুলিশ এল। গিয়ে দেখি নাক, মুখ থেতলানো। হাতের চামড়া উঠে এসেছে। পা অনেকটা কাটা। কারও সঙ্গে তো ঝামেলা ছিল না। বাড়িতে মা, বউ, দুই ছেলে নিয়ে থাকত। কীভাবে এমন ঘটনা ঘটতে পারে, বুঝতেই পারছি না।”