গঙ্গাসাগর: প্রতি বারের মতো এ বারেও মেলা শুরুর আগেই গঙ্গাসাগর সফরে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে গিয়ে একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন তিনি। গঙ্গাসাগর মেলার আয়োজনে রাজ্য সরকার কতটা নিয়োজিত সে কথাও উঠে এসেছে মুখ্যমন্ত্রীর কথায়। পাশাপাশি গঙ্গাসাগরের ক্ষেত্রে কেন্দ্র সরকারের বঞ্চনার অভিযোগও তুললেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি এ বিষয়ে বলেন, “গঙ্গাসাগরকে জাতীয় মেলা ঘোষণা করার জন্য আমি কেন্দ্রের কাছে অনেক বার আবেদন করেছি। কুম্ভ মেলার সমস্ত খরচা দেয় কেন্দ্র। কিন্তু গঙ্গাসাগরে একটা বাতাসা দিয়েও উপকার করে না। পুরো খরচ রাজ্যের।”
কথাতেই আছে ‘সব তীর্থ বার বার গঙ্গাসাগর এক বার’। এই কথা বলার অন্যতম কারণ গঙ্গাসাগরে পৌঁছনোর প্রতিকূলতা। এই বিষয়টিও বুধবার উঠে এসেছে মমতার কথায়। তিনি বলেছেন, “কুম্ভ মেলা যে সব এলাকায় সেখানে রেল, সড়ক ও বিমানের যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই ভাল। কিন্তু গঙ্গাসাগরে পুর্ণ্যার্থীদের আসতে হয় জল পেরিয়ে। আগে এ জন্য মানুষ আসতে পারত না। এলে অনেকে ফিরতে পারত না। কিন্তু এখন আর ততটা অসুবিধা নেই। আমরা গত কয়েক বছর ধরে পুর্ণ্যার্থীদের সুবিধার জন্য সমস্ত রকম ব্যবস্থা করেছি। এখানে মুড়িগঙ্গার উপর ব্রিজ করতে পারলে খুব ভাল হয়। কিন্তু এর জন্য বিপুল অঙ্কের টাকার দরকার। কেন্দ্রকে এ ব্যাপারে বললেও কেন্দ্র গা করেনি। আমরা মুড়িগঙ্গার উপর ব্রিজ তৈরির পরিকল্পনা করছি। আমরা নিজেরাই চেষ্টা করছি।” এর পাশাপাশি রাজ্যের করা তীর্থ কর মকুবের বিষয়টিও তুলেছেন তিনি।
গঙ্গাসাগর মেলায় আগত পুর্ণ্যার্থীদের যাতে কোনও ত্রুটি-বিচ্যুতি না হয়, সে জন্য সজাগ মুখ্যমন্ত্রী। ফিরহাদ হাকিম, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, সুজিত বসু, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, বঙ্কিম হাজরার মতো রাজ্যের একাধিক মন্ত্রীদের গঙ্গসাগর মেলার দেখভালের বিভিন্ন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। ৭ জানুয়ারি থেকে ১৭ জানুয়ারি অবধি তাঁদের উপর বিভিন্ন কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পাশাপাশি বুধবার গঙ্গাসাগরে হেলিপ্যাডের উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। একটি হেলিকপ্টার রোজ এখানে আসবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। কাকদ্বীপে কামারহাট সেতুরও উদ্বোধন করেছেন তিনি। গঙ্গাসাগরে এক তলা একটি আসাবস্থল বানানো হয়েছে। মেলাপ্রাঙ্গনকে আলোকজ্জ্বল করতে বিশেষ আলোর ব্যবস্থাও উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এই প্রকল্পগুলি উদ্বোধনের পর মুখ্যমন্ত্রী গিয়েছিলেন ভারত সেবাশ্রম সংঘে। সেখানে গিয়ে কম্বল বিতরণ করেন তিনি। পাশাপাশি বিভিন্ন দুর্যোগে ভারত সেবাশ্রম সংঘের ভূমিকার প্রশংসা শোনা গিয়েছে মমতার গলায়। ভারত সেবাশ্রম থেকে মুখ্যমন্ত্রী যান কপিল মুনির আশ্রমে। সেখানে গিয়ে পুজো দেন তিনি।