তমলুক: আবাস যোজনার বাড়ি নিয়ে বর্তমানে তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি। এর মধ্যে আবাস যোজনার বাড়ি, শৌচাগার তৈরি করিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা-গয়না নেওয়ার অভিযোগ উঠল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। শুধু অভিযোগ ওঠা নয়, ওই ব্যক্তিকে গাছে বেঁধে গণপিটুনি দিল গ্রামবাসী। তারপর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উত্তেজিত গ্রামবাসীর হাত থেকে ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে। শুক্রবার বিকালে এমনই ঘটনার সাক্ষী হল পূর্ব মেদিনীপুরের উত্তর মির্জাপুর গ্রামে। যা নিয়ে ফেরল শাসকদলের বিরুদ্ধে টাকা লুঠের অভিযোগে সরব হয়েছে বিজেপি।
পুলিশ জানায়, প্রহৃত ওই ব্যক্তির নাম । উত্তর মির্জাপুর গ্রামেরই বাসিন্দা ওই ব্যক্তি আবাস যোজনার বাড়ি, শৌচাগার পাইয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা নিতেন বলে অভিযোগ। গ্রেফতারির পর তিনি ঘটনার কথা স্বীকার করেছে। ওই ব্যক্তি স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যের নাম করেই টাকা নিয়ে প্রতিশ্রুতি দিতেন বলে অভিযোগ। যদিও একথা অস্বীকার করেছে অভিযুক্ত। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
গ্রামবাসীর অভিযোগ, স্থানীয় এক পঞ্চায়েত সদস্যের নাম করে আবাস যোজনায় ঘর পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিতেন ওই ব্যক্তি। যদিও অভিযুক্তের দাবি, শৌচাগার দিতে না পারায় গ্রামবাসীর থেকে নেওয়া ১০০০ টাকা ফেরত দিতে এসেছিলেন। তবে তিনি কেবল একজনের থেকে নয়, গ্রামের অনেকের থেকেই টাকা নিয়েছিলেন এবং অনেকে গয়না দিয়েও সর্বস্বান্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ গ্রামবাসীর। যদিও কোনও পঞ্চায়েত সদস্যের সহায়তায় বাড়ি পাইয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই ব্যক্তি। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
তবে এই ঘটনায় শাসকদলের বিরুদ্ধে ফের সরব হয়েছে বিজেপি। স্থানীয় বিজেপি নেতা বামদেব গুচ্ছাইত শাসকদলের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে বলেন, “অভিযুক্ত ব্যাক্তি স্থানীয় ব্লক সভাপতির ঘনিষ্ঠ এবং তাঁর নাম করেই প্রভাব খাটিয়ে টাকা তুলতেন।” যদিও বিজেপির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শহিদ মাতঙ্গিনী তৃণমূল ব্লক সভাপতি রাকেশ হাজরা।
প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিন ধরেই আবাস যোজনা নিয়ে সরগরম রাজ্য-রাজনীতি। গরীব লোকেরা নয় শাসকদলের নেতাদের আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠরাই আবাস যোজনায় বাড়ি পাচ্ছে বলে অভিযোগ বিজেপির। যদিও ইতিমধ্যে এক বিজেপি সাংসদের বাবার নাম আবাস যোজনার তালিকায় উঠেছে। এটা অবশ্য রাজনৈতিক চক্রান্ত বলেই দাবি বিজেপির। এই রাজনৈতিক চাপানউতোরের মধ্যেই উত্তর মির্জাপুরের এদিনের ঘটনা নতুন করে আগুনে ঘৃতাহুতি করল বলে দাবি রাজনৈতিক মহলের।