মুর্শিদাবাদ: স্কুল থেকে একের পর এক শিক্ষক বদলি হয়ে অন্য স্কুলে চলে যাচ্ছেন, কিন্তু বদলে নতুন কোনও শিক্ষক আসছেন না। দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত প্রতিটি ক্লাসে সব বিষয়ের পড়াশোনা করানোই দায় হয়ে উঠেছে। অগত্যা সমাধানের উপায় নিজেরাই বেছে নিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। ছাত্রদের থেকেই অতিরিক্ত টাকা নিয়ে অস্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ করা হচ্ছে। এমনই ছবি মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) হরিহরপাড়া থানার স্বরূপপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে। সরকারি স্কুলে কেন এমন ব্যবস্থা? প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবকেরা। কিন্তু প্রধান শিক্ষক বলছেন, এ ছাড়া আর কোনও উপায় নেই তাঁর কাছে। একজন-দুজন নয়, ১৪ জন শিক্ষক বদলি হয়ে চলে গিয়েছেন। তার বদলে কোনও শিক্ষক আসেননি। তিনি জানিয়েছেন, স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা দু হাজারের বেশি। ২০২৩ সালে সেই সংখ্যা বাড়বে আরও।
জানা গিয়েছে মুর্শিদাবাদের ওই স্কুলে প্রতি বছর ২৪০ টাকা করে ভর্তির জন্য নেওয়া হয়। এ বছর সেটা বাড়িয়ে ৩৫০ টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ প্রায় ১০০ টাকা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ভর্তির খরচ।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক যাদব চন্দ্র বিশ্বাস জানিয়েছেন, ২০২২ সালে পড়ুয়ার সংখ্যা ছিল ২০৬৪। ২০২৩ সালে সেই সংখ্যা আরও প্রায় ২১০০ বাড়বে। ফলে প্রতিটি ক্লাসে শিক্ষক পাঠানো প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে। তাই স্কুল বাঁচাতে অল্প টাকায় স্থানীয় ৬ জন ‘গেস্ট টিচার’ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। তাঁদের দিয়েই নিয়মিত ক্লাস করানো হচ্ছে স্কুলে। এজন্যেই বাড়তি টাকা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
অন্যান্য শিক্ষকেরাও প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে একমত। তাঁরা জানিয়েছেন, এত কম শিক্ষক আছেন যে ক্লাস করানো যায় না। ওই অস্থায়ী শিক্ষকদের দিয়ে পড়ানো, পরীক্ষার খাতা দেখা সবটাই করানো হচ্ছে।
উল্লেখ্য, কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু বদলি নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তিনি উল্লেখ করেছিলেন, গ্রামের শিক্ষকেরা শহরে চলে যাচ্ছেন অথচ গ্রামে কেউ যেতে চাইছেন না। স্কুলগুলির পড়ুয়া ও শিক্ষকদের সংখ্যার অনুপাত নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। এবার ফের ধরা পড়ল তেমনই একটি ছবি।