মুর্শিদাবাদ: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে তাঁর নাম। তাঁর সঙ্গে রাজনৈতিক যোগের অভিযোগ। এখন চর্চায় আলোয় ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের বেলডাঙা শাখার প্রধান কার্তিক মহারাজ। বাংলায় এত সাধু-সন্ত থাকলেও কেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেবল তাঁরই নাম মুখে আনলেন, তার ব্যাখ্যা TV9 বাংলার এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে দিয়েছেন কার্তিক মহারাজ। তাঁর বক্তব্য, এটা হঠাৎ বলা কোনও কথা নয়। এর পিছনে অনেকটা বড় প্ল্যানিং রয়েছে। কিন্তু তাঁর কথা প্রসঙ্গে মুখে নিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী, রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নাম। তাঁরা একসময়ে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘে টাকা দিতেন বলেও উল্লেখ করেছেন। কিন্তু সেই অধীর চৌধুরীই এবার কার্তিক মহারাজকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন। তিনি বললেন, “সাধুর চরিত্র কী, তা এখানকার মানুষ সকলেই জানেন।”
সাংবাদিক বৈঠকে অধীর চৌধুরীকে কার্তিক মহারাজকে নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বলা বক্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রশ্ন করা হয়। তখন অধীর বলেন, “ধর্মের কথা অপরকে না বলে, নিজে শিখুন, নিজে পড়ুন। আপনি আচারি ধর্ম। নিজে আগে ধর্ম পালন করুন, তারপর লোককে শেখান।”
আর তারপরই অধীর চৌধুরী বিস্ফোরক দাবি করেন। তিনি বলেন, “যাঁর কথা বলেছেন, তিনি এখানে সেইভাবেই পরিচিত। তার পরিচিতি নিয়ে এখানে বহু মানুষের প্রশ্ন রয়েছে। সাধু-সন্তের যেরকম চরিত্র হওয়া প্রয়োজন, সেই চরিত্র তাঁর নেই। তিনি সরাসরি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসাবেই এখানকার মানুষের কাছে পরিচিত। তিনি কখনও তৃণমূলের, কখনও বিজেপি-র, কখন তিনি কার দলের সমর্থক, তা নিয়ে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি রয়েছে।”
অধীর চৌধুরী আরও বলেন, “যাঁরা বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠনের নেতারা রয়েছেন, আমরা তাঁদের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন চেয়ারে দেখে থাকি। ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ, রামকৃষ্ণ মিশনের সঙ্গে বাংলার মানুষের ওতপ্রোত সম্পর্ক। বিশ্ব জুড়ে খ্যাতি। কিন্তু তার মধ্যে কি বিচ্যুতি নেই? নিশ্চয়ই আছে। কিন্তু সেই বিচ্যুতিকে সামনে রেখেই শাসকদল ধর্মের রাজনীতি করছে। যারা ধর্মকে দেশের সবথেকে বেশি হাতিয়ার বলে মনে করে, সেটাই রাজনীতির একটা পন্থা মনে করেন, তাঁদের মুখে এ কথা মানায় না।”
সাধু সন্তদের, ধর্মীয় সংগঠনের নেতাদের কোনও রাজনৈতিক মঞ্চে যাওয়া উচিত নয় বলেও মন্তব্য করেন অধীর। যদিও কার্তিক মহারাজ বলেছেন, “আমি কোনও ডন নই, আমি মস্তানবাহিনী পরিচালনা করি না। আমি হিন্দু সমাজের সন্ন্যাসী। আমি সমাজ ধর্ম সংস্কৃতি নিয়ে চলি।”