ভরতপুর: ধনধান্য অডিটোরিয়াম থেকে রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে বলতে শোনা গিয়েছে,’উপরওয়ালার আশীর্বাদে একদিন সংখ্যাগুরু হবেন সংখ্যালঘুরা।’ পুরমন্ত্রীর এই মন্তব্যেরই তীব্র বিরোধিতা করেছে বিজেপি। তবে শুধু বিরোধী দল নয়, ফিরহাদের মন্তব্যকে সমর্থন করেননি খোদ তাঁর দলের বিধায়ক হুমায়ুন কবির। তিনি বললেন, উপরওয়ালা কোন সম্প্রদায়ের মানুষ বেশি পাঠাবেন এই নিয়ে মন্তব্য করা উচিৎ নয়।
বস্তুত, হুময়ুনের সঙ্গে ববির ‘দ্বন্দ্ব’ আগেই ছিল। যে সময় ভরতপুরের বিধায়ক পুলিশমন্ত্রী হিসাবে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছিলেন, সেই সময় দাঁড়িয়ে কার্যত ক্ষুব্ধ হন ববি। তাঁকে বলতে শোনা যায়, “যারা এত কথা বলছে, তারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি সরিয়ে নির্বাচনে নামুক। তারপর জিতে দেখাক। বুঝে যাব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবদিক থেকে বলিষ্ঠ নেত্রী। তিনি এখনও সব দফতর এবং দলকে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম।” পাল্টা শুনিয়েছিলেন হুমায়ুনও। খুল্লামখুল্লা রাজ্যের মন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তাঁকে বলতে শোনা যায়, “ফিরহাদ হাকিম এত কথা বলছেন, উনি নিজেই মুর্শিদাবাদের দায়িত্বে থাকা সত্ত্বেও আমাদের জেলার কোনও সমস্যার সমাধানে গুরুত্ব দেন না। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে কথা বলতে এলে আমাদের কথা শুনতে চান না। উনি মাত্র চার জনকে চেনেন।” সঙ্গে এও বলতে শোনা যায়, মুখ্যমন্ত্রী ববি হাকিমকে মুর্শিদাবাদের দায়িত্ব দিলেও তিনি গুরুত্ব দিয়ে তা দেখেন না।
এরপর রবিবার ফিরহাদের সংখ্যাগুরু ও সংখ্যালঘুর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে হুমায়ুন বলেন, “হাকিম সাহেবের বক্তব্য শুনেছি। এই সব বলার আগে ভেবে চিন্তে বলা উচিত। উনি বলতে চেয়েছেন, এ রাজ্যে মুসলিম সমাজের মানুষরা সংখ্যালঘু নয়, সংখ্যাগরিষ্ঠতায় চলে আসব। আমি ওঁকে কোরান পড়তে বলব। আল্লাহ গোটা বিশ্বকে সৃষ্টি করছেন। উনি এক শব্দে বিশ্বকে যেমন সৃষ্টি করতে পারেন, তেমনই এক শব্দে বিশ্ব শেষ করতে পারেন।”
ভরতপুরের বিধায়ক বলেন, “তিন কোন সম্প্রদায়ের মানুষকে বেশিদিন বাঁচিয়ে রাখবেন, কোন সম্প্রদায়ের মানুষকে তাড়াতাড়ি ওঠাবেন সেটা উনি জানেন। এই নিয়ে ভেবেচিন্তে কথা বলা উচিত। হাকিম সাহেব কেন বলেছেন সেটা উনিই বলতে পারবেন। আল্লাহ কাউকে হিন্দু ঘরে পাঠাচ্ছেন, কাউকে ইসলাম ঘরে। কাজেই কার সংখ্যা কোথায় দাঁড়াবে সেই নিয়ে কথা বলার অধিকার কোনও মানুষের আছে কি না মানি না।”