বড়ঞা: নতুন বছর ভালো কাটবে না বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবন কৃষ্ণ সাহা’র। প্রথমে একটি মামলায় নাম জড়িয়েছিল, এবার বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া নথিতে আরও দুটি মামলায় নাম জড়িয়েছে জীবনের। সিবিআই-এর দাবি, প্রাইমারি-আপার প্রাইমারি নিয়োগ দুর্নীতিতেও যুক্ত জীবন। বাড়ির পুকুরে মোবাইল ফেলে দিয়ে নিজের বিপদ বাড়িয়েছেন বিধায়ক। তল্লাশির সময়ে মোবাইলটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জলে ফেলে দেওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা অভিযোগ আনবেন তদন্তকারীরা। তাতেই প্রশ্ন উঠছে, তিনি আইনের মারপ্যাঁচ সম্পর্কে কতটা জানেন, তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। তবে বিধায়ক এ বিষয়ে নিশ্চিত ছিলেন, একটি মোবাইল যদি দীর্ঘক্ষণ জলে থাকে, তাহলে তার থেকে ডেটা উদ্ধার করা কার্যত অসম্ভব। বা সেটা করা বেশ কঠিন ও সময়সাপেক্ষ। আর তাই জেনে বুঝেই মোবাইল জলে ফেলেছিলেন তিনি। তবে তাঁর এই কাজ স্পষ্ট করে দিয়েছে, তাঁর বিরুদ্ধে প্রমাণ লুকিয়ে এই মোবাইল, যেটা তদন্তকারীদের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার।
অভিজ্ঞ আইনজীবীদের বক্তব্য, এই প্রমাণ লোপাটের চেষ্টার অভিযোগে জীবনের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করতে পারেন তদন্তকারীরা। মোবাইলটি উদ্ধার হওয়ার পর ইতিমধ্যেই তদন্তকারীরা টেকনিক্যাল এক্সপার্টদের সঙ্গে কথা বলছেন।
বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তদন্তকারীরা একটি বিষয়ে নিশ্চিত, নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত জীবনকৃষ্ণ। কেন তাঁর বাড়িতে চাকরিপ্রার্থীদের তালিকা? তা নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করেন তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর,জীবন যা জবাব দিয়েছেন, তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেননি তদন্তকারীরা।
সিবিবআই সূত্রে খবর, বর্ধমান ও মুর্শিদাবাদ জেলাজুড়ে এজেন্ট ছিল জীবনের। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজন এজেন্টদের নাম তদন্তকারীদের হাতে এসেছে। জীবন ও তাঁর এজেন্টদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শীঘ্রই তলব করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে শুক্রবার বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ জীবনকৃষ্ণের বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই। তখনই তিনি নিজের দু’টি মোবাইল বাড়ির পাশের পুকুরে ছুড়ে ফেলে দিয়েছিলেন। সেই থেকে পুকুরে চিরুনিতল্লাশি চালাচ্ছিলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। ৩২ ঘণ্টা পর মোবাইলটি উদ্ধার হল, আর তাতেই বিপদ বাড়ল জীবনের।