কলকাতা: মঙ্গলবার ‘মনরেগা’ (MGNREGA) প্রকল্পের দুনীর্তির তদন্তে নেমে রাজ্যের চুঁচুড়া, বহরমপুর, ঝাড়গ্রাম ও সল্টলেকে তদন্ত করেন ইডি-র আধিকারিকরা। তবে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট তদন্ত করার আগেই এই দুর্নীতির তদন্তে নেমেছিল সিআইডি। মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা থানায় দায়ের হওয়া মনরেগা সংক্রান্ত এই দু’টি মামলার তদন্ত করেছিল সিআইডি-র ইকোনমিক অফেন্স উইং। দুই মামলাতেই মূল অভিযুক্ত হিসাবে নাম উঠে আসে বরখাস্ত সরকারি কর্মী রথীন্দ্রনাথ দে-র। সূত্রের খবর, তদন্তে নামতেই বাধার মুখে পড়তে হয় সিআইডি কর্তাদের। চার্জশিট জমা দেওয়ায় প্রাক্তন ডিজি-র ধমকের মুখেও নাকি পড়তে হয় সিআইডিকে। এখানেই উঠছে প্রশ্ন। কোন প্রভাবশালীর হাত রয়েছে এই রথীন্দ্রনাথের উপর?
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে ‘মনরেগা’ (MGNREGA) দুর্নীতির প্রথম অভিযোগ জানিয়েছিলেন তৎকালীন বেলডাঙা ১ এর বিডিও বিরূপাক্ষ মিত্র। বর্তমানে তিনি পঞ্চায়েত দফতরের ডেপুটি সেক্রেটারি। মুর্শিদাবাদের প্রাক্তন জেলা শাসক জগদীশ প্রসাদ মিনারের নির্দেশে শুরু হয় বিভাগীয় তদন্ত। তারপর দুটি মামলা করেন বিরূপাক্ষ।
এরপর সেই তদন্তের ভার যায় সিআইডি-র কাছে। কিন্তু ২০১৯ সালে তদন্ত ভার সিআইডি পেলেও ধামাচাপা পড়ে থাকে বলে অভিযোগ ওঠে। এরপর ২০২৩ সালে এই মামলায় চার্জশিট জমা দেওয়া হয়। সেই চার্জশিটে উঠে আসে তৎকালীন সুজাপুর পঞ্চায়েতের এক্সিকিউটিভ অ্যাসিসট্যান্ট রথীন্দ্রনাথের নাম। তবে তিনি কেবল সুজাপুর নন, মহুলা গ্রাম পঞ্চায়েতের এক্সিকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্টের অতিরিক্ত দায়িত্বেও ছিলেন। তৎকালীন পঞ্চায়েত প্রধান মমতাজ হোসেনর সঙ্গে যোগ-সাজোশে একশো দিনের কাজের টাকা নয়ছয় করা থেকে শুরু করে নিজের বোন ইতি চট্টোপাধ্যায়ের নামে ভুয়ো সংস্থা তৈরি করে টাকা পাচারেও নাম জড়ায় রথীন্দ্রনাথের। এখানেই শেষ নয়, একই রকম দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে নওদা ব্লকে থাকাকালীনও।
জেলাশাসকের নির্দেশে মামলা হলেও, ২০২৩ সালে চার্জশিট দেওয়া নিয়ে প্রশাসনের অন্দরে জলঘোলা হয়। সূত্রের খবর, শাসক দলের শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশ এই চার্জশিট দেওয়ার বিষয়ে অবগত ছিলেন না। এমনকী, চার্জশিট জমা হওয়ায় প্রাক্তন ডিজি-র ধমকের মুখে পড়তে হয় একাধিক সিআইডি কর্তাকে। প্রসঙ্গত, গতকাল রথীন্দ্রনাথ দে-র বাড়িতে পৌঁছন পাঁচজন ইডির গোয়েন্দা আধিকারিক। সার্চ ওয়ারেন্ট দেখিয়ে হয় তল্লাশি। এমনকী পরিবারের সকল সদস্যদের বসিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।