ভগবানগোলা : উচ্চতা মেরেকেটে সাড়ে পাঁচফুট। কিন্তু, তাঁর দাড়ির দৈর্ঘ্য আট ফুট। দাড়ির জন্য মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলার দিয়ার ফতেপুরের বাসিন্দা ফকির মহম্মদ জবিরুল শেখকে এলাকার সবাই চেনে। বছর আঠান্নর জবিরুল ২০০০ সাল থেকে দাড়ি রাখতে শুরু করেন। এখন টোটো চালিয়ে সংসার চালান। মা, একভাই ও তাঁর সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরোয় অবস্থা। তবুও স্বপ্ন দেখা ছাড়েননি তিনি। নিজেকে অন্যভাবে চেনাতে চান সারা বিশ্বের কাছে। দাড়ি রেখেই সেই স্বপ্ন পূরণ করতে মরিয়া তিনি।
কেন হঠাৎ দাড়ি রাখতে শুরু করলেন ?
দাড়ি রেখেই পরিচিত হবেন তিনি। বছর বাইশ আগে নাকি এই স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন জবিরুল। ২০০০ সালে মুর্শিদাবাদে বন্যার পর থেকে আর দাড়ি কাটেননি। সেই থেকে দাড়ি লম্বা করছেন। দাড়ি রাখার শখ পূরণের জন্য বিয়েও করেননি। এখন তাঁর একটাই ইচ্ছা, সব থেকে লম্বা দাড়ির খেতাব জেতা। বললেন, “এই দাড়ির জন্য গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নিজের নাম তুলতে চাই। সেজন্য দাড়ি কাটব না আরও কয়েকবছর।”
এত লম্বা দাড়ির ঠিকমতো যত্ন নিতে হয় বলে জানালেন জবিরুল। প্রতিদিন স্নানের সময় ভাল করে দাড়ি পরিষ্কার করেন। এমনকী, রাস্তায় বেরোলে সাবধানে থাকতে হয়। ট্রেনে উঠলে জামায় লম্বা দাড়িটি গুটিয়ে রাখেন।
এক সময় লরি চালিয়ে সংসার চালাতেন তিনি। নিজে লরি কিনলেও পারিবারিক বিবাদে সেই লরি বিক্রি করে দিতে হয়। ২০১০ সাল পর্যন্ত অন্যের গাড়ি চালাতেন। এখন একটা টোটো চালান। এলাকায় ঘুরে একবেলায় যা উপার্জন হয় সেই দিয়েই চালিয়ে নেন দু’বেলা। তাঁর ভাই রাজমিস্ত্রির কাজ করে কিছুটা সামাল দেন সংসারে।
বিশ্বে সবচেয়ে বড় দাড়ির রেকর্ড রয়েছে নরওয়ের হানস এন লাঙ্গসেথের দখলে। ১৯২৭ সালে তাঁর মৃত্যর সময় দাঁড়ির দৈর্ঘ্য ছিল ১৭ ফুট ৫ ইঞ্চি। জবিরুল চান, একদিন তাঁরও নাম উঠুক গিনেস বুকে। সেই দিনের আশায় দাড়ির যত্ন নিয়ে চলেছেন তিনি। মা, ভাই ছাড়া দাড়িই যে তাঁর আপনজন।