মুর্শিদাবাদ: একটি পরিত্যক্ত এলাকা। একগাদা সাইকেল একে অপরের গায়ে হেলিয়ে রাখা। গা বেয়ে গজিয়ে উঠেছে লতা-পাতা, লাউ গাছের ডগা। দৃশ্যত মনে হতেই পারে, সাইকেলের মাচা বানিয়ে কেউ সবজি চাষ করছেন। কিন্তু না, এটা আসলে সবুজ সাথী সাইকেলের গ্যারেজ! গ্যারেজ কারণ এক সঙ্গে প্রায় ৭০টার মতো সাইকেল রাখা রয়েছে সেখানে। মাথার ওপর টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছিল ত্রিপল, ঝড়ে উড়েছে যা আগেই। সাইকেলগুলি দেখলেই বোঝা যাবে, সেগুলির চাকা গড়ায়নি অনেকদিনই। রীতিমতো জং পড়েছে স্পোকে। কিন্তু এতগুলো সবুজ সাথীর সাইকেল কেন এই ভাবে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে? মুর্শিদাবাদের রানিগঞ্জের এক নম্বর ব্লকের সবুজ সাথী প্রকল্পের সাইকেলের অবস্থা নিয়ে রীতিমতো প্রশ্ন উঠছে।
এই ব্লকের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর অফিসের হলঘরের পাশেই মাচা একটা জায়গায় ফেলে রাখা রয়েছে সাইকেলগুলোকে। প্রত্যেকটা সাইকেল একেবারে ‘ব্র্যান্ড নিউ’। কিন্তু এতগুলো সাইকেল এখানে কেন? খোঁজ নিলে স্বনির্ভর গোষ্ঠীরই একাংশ কর্মী জানাচ্ছেন, এই সাইকেল গুলো এলাকার সব স্কুলে বরাদ্দ হওয়ার পর বেঁচে গিয়েছে। তাই অতিরিক্ত সাইকেলগুলোকে ফেলে রাখা হয়েছে এইভাবেই। দীর্ঘদিন ধরেই এই অবস্থায় রয়েছে সাইকেলগুলো। রোদ আড়াল করলে একটা ত্রিপল টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছিল বাঁশের মাচা করে। কিন্তু ঝড়ে উড়েছে সেটাও।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “এইভাবে সরকারের জিনিস নষ্ট হচ্ছে। এটার ওপর তো সরকারের লোকেরই নজর দেওয়া উচিত। এতে তো সাধারণ মানুষের হাত নেই। ”
প্রত্যন্ত গ্রামের ছেলেমেয়েদের সুবিধার্থে সাইকেল দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সরকারি প্রকল্পের জিনিস কীভাবে এতটা অযত্নের শিকার? জানতে যোগাযোগ করা হয়েছিল এলাকার বিডিও মহম্মদ ইকবালের সঙ্গে। তিনি এ বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়াই দিতে চাননি। যেহেতু বিডিও-ই এই ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া দেননি, ফলে চুপ বাকি প্রশাসনিক আধিকারিকরাও।
এপ্রসঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল নেতা অশোক দাস বলেন, “এটা প্রশাসনের ব্যাপার। প্রশাসনিক কর্তারাই বিষয়টি খতিয়ে দেখুন।” অন্যদিকে, বিজেপি নেতা লাল্টু দাস বলেন, “সবুজ সাথীর সাইকেল নিয়ে আগেও দুর্নীতি হয়েছে। এর পিছনেও অন্য কোনও কারণ রয়েছে। সেটা খতিয়ে দেখতে হবে।”