মুর্শিদাবাদ: প্রধান শিক্ষকই মদ খেয়ে স্কুলে আসেন। চোখে হলুদ রঙের সানগ্লাস। অফিস ঘরে ঢুকে চেয়ারে গা এলিয়ে বসে থাকেন। ক্লাস হল কী হল না, সে বিষয়ে তাঁর কোনও নজর নেই। কথা বলতে গেলে জড়িয়ে যায় জিভ। দীর্ঘদিন দেখার পর স্কুলে বিক্ষোভ দেখালেন অভিভাবক ও গ্রামবাসীরা। মুর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জে চক্রের শেরপুর ৪৬ নম্বর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে দেখলে অবাক হতে হয় বইকি। বৃহস্পতিবার সকালে তিনি ওই অবস্থাতেই স্কুলে ঢুকলে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন অভিভাবকরা। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের নাম রঘুপতি সর্দার।
অভিভাবক ও গ্রামবাসীদের অভিযোগ, রঘুপতি সর্দার দীর্ঘদিন ধরেই স্কুলে মদ খেয়ে আসেন। পঠনপাঠন ও স্কুলের অন্যান্য পরিকাঠামোর ওপর তাঁর কোনও নজর নেই। এমনকি শিক্ষকরা যথাসময়ে স্কুলে আসছেন কিনা, ক্লাস হচ্ছে কিনা, সে সব ব্যাপারে তিনি কখনই ওয়াকিবহাল নন। গয়ংগচ্ছ ভাবেই স্কুল চলছে। অথচ এই স্কুলের ওপরেই এই গ্রাম, আশপাশের আরও গ্রামের ছেলেমেয়ে নির্ভরশীল।
বৃহস্পতিবার ওই অবস্থাতে স্কুলে ঢুকতেই তাঁকে ঘিরে ধরেন অভিভাবকরা। প্রধান শিক্ষককে ঘরবন্দি করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। ওই স্কুলে সহকারি শিক্ষক সমীর কুমার সিনহা , প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ওঠা মদ্যপানের অভিযোগ শিকার না করলেও, তিনি জানান প্রধান শিক্ষক বেশ কিছুদিন থেকে স্নায়ুর রোগে সমস্যায় ভুগছেন। তাঁকে একাধিক ওষুধ খেতে হচ্ছে। আর সেই কারণেই নাকি তিনি ঝিমিয়ে থাকছেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় সামসেরগঞ্জ থানার পুলিশ। প্রধান শিক্ষককে বিক্ষোভের মুখ থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এক অভিভাবক বলেন, “বাচ্চাদের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করছেন। স্কুলে আসেন না। যখন আসেন মদ্যপান করে আসেন। তাঁর সঙ্গে কথা বলাই দুস্কর। আমরা চাই এই প্রধান শিক্ষককে এখান থেকে বদলি করা হোক।” অভিভাবকদের বক্তব্য, অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক রঘুপতি সর্দারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। যদিও প্রধান শিক্ষক রঘুপতি সর্দার এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।