মুর্শিদাবাদ: ফের প্রকাশ্যে শাসক শিবিরের গোষ্ঠীকোন্দল। তৃণমূল (TMC) পরিচালিত মুর্শিদাবাদ-জিয়াগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ বিজলা বিবি ও ডাঙ্গাপাড়া পঞ্চায়েত সদস্য উমর শেখের বাড়িতে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠল জেলা তৃণমূল সভাপতি ও অঞ্চল সভাপতি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি শাওনী সিংহ রায়।
পঞ্চায়েত কর্মাধক্ষ্য়া বিজলা বিবির অভিযোগ, শনিবার রাতে তাঁর বাড়িতে দুষ্কৃতীরা চড়াও হয়ে আচমকা বোমাবাজি করে। তাঁদের দোকানঘর ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ। এমনকী, ইট ছুড়ে বাড়ির জানলার কাচ ভেঙে দেয় দুষ্কৃতীরা। ইটের আঘাতে বিজলা বিবির ভাসুরের মাথা ফেটে যায় বলে অভিযোগ। তিনি বর্তমানে হাসপাতালে চিকিত্সাধীন।
কর্মাধক্ষ্যা বিজলা বিবির কথায়, “আমি বাড়িতে তখন ছিলাম না। আমার জা-ভাসুর আর স্বামী ছিলেন। প্রথমে আমাদের দোকানে বোমা মারা হয়। প্রায় দশ পনেরজন আমাদের বাড়িতে এসে তারপর চড়াও হয়। লাঠি দিয়ে, ইট ছুড়ে ঘরের দরজা জানলা ভেঙে দেয়। ইটের ঘায়ে আমার ভাসুরের মাথা ফেটে যায়। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। এসবই জেলা সভাপতি ও অঞ্চল সভাপতির মদতে হয়েছে। এছাড়া আর কেউ এ কাজ করেনি।” তৃণমূল পঞ্চায়েত কর্মাধক্ষ্য়ার আরও বলেন, “আমরা ২০০৮ সাল থেকে কট্টরভাবে তৃণমূল। জেলা সভাপতি ২০১৬-তে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে আসেন। তিনি আসার পর তাঁকে সহজে কেউ মেনে নেয়নি। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিরুদ্ধ অবস্থার মধ্যে দিয়ে তাঁকে যেতে হয়েছে। ফলে জেলা সভাপতি হওয়ার পরেও তৃণমূল নেত্রীর আক্রোশ যায়নি। সেই ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকেই এই হামলা।”
পাল্টা জেলা সভাপতি শাওনী সিংহ রায় সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছেন তিনি বা তাঁর কোনও অনুগামী এই হামলার সঙ্গে যুক্ত নন। ফোনে তিনি TV9 বাংলার প্রতিনিধিকে বলেন, “আমি বিধায়ক হিসেবে দশ বছর কাটিয়েছি। আগে এখানে কীভাবে অরাজকতা হয়েছে, পূ্র্বতন নেতৃত্বরা কে কী করেছেন তা এলাকার মানুষ সবাই জানেন। আমি একটা ঘটনার কথা শুনেছি, তবে কোনও বাড়ি ভেঙেছে বলে শুনিনি। বিজলাবিবির এলাকার মহিলারা বেশি আতঙ্কগ্রস্ত, কারণ তাঁরা জানেন ওই এলাকায় কী হয়ে চলেছে। তবে আমি পুলিশকে সবটাই বলেছি। পুলিশ পদক্ষেপ করবে। এক্ষেত্রে কোনও দোষীকেই রেয়াদ করা হবে না।”
শাসক শিবিরের আদি-নব্য দ্বন্দ্বে কটাক্ষ হেনেছে গেরুয়া শিবির। স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের তরফে বলা হয়েছে, তৃণমূল কংগ্রেস দলের কোনও আদর্শ নেই। একটাই লক্ষ্য বোম পিস্তল লাঠি নিয়ে ক্ষমতায় আসতে হবে। এই ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে নতুন সভানেত্রী এলাকায় আসার পর। তার পরেই, তৃণমূলের গোষ্ঠীতে গোষ্ঠীতে বিরোধ হচ্ছে। সরকারি সম্পত্তি আত্মসাত্ করার পর তা বিজেপির ঘাড়ে চাপিয়ে দিচ্ছে তৃণমূল এমনই অভিযোগ পদ্ম শিবিরের। কিন্তু, এই ধরনের কোনও ‘অগণতান্ত্রিক’ কাজে যুক্ত নয় বলেই জানিয়েছে বিজেপি। আরও পড়ুন: রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে লক্ষ টাকার গয়না! সবটাই ‘কত্তাবাবুর’, জেরায় স্বীকার শ্যামাপ্রসাদ ঘনিষ্ঠের