মুর্শিদাবাদ: দুষ্কৃতীদের ছোড়া গুলিতে আহত তৃণমূল (TMC) নেতা। মঙ্গলবার সন্ধেয় ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের লালবাগ এলাকায়। আহত ওই তৃণমূল নেতার নাম আলতাব আলি। পেশায় শিক্ষক। বাড়ি ইসলামপুর থানা এলাকার লোচনপুরে। তাঁর দুই মেয়ে লালবাগ এলাকায় পড়াশোনা করে। সেই সূত্রে লালবাগে যাতায়াত লেগেই থাকত আলতাবের। এদিনও ইসলামপুর থানা এলাকার লোচনপুর থেকে লালবাগ যাওয়ার সময় মুর্শিদাবাদ থানা এলাকার আজমেরসারা এলাকায় একদল দুষ্কৃতী তাঁর উপর চড়াও হয় বলে অভিযোগ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনি বাইকে চেপে আসছিলেন, সেই সময়ই তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা।
আহত ওই তৃণমূল নেতাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরে সেখানে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। তৃণমূল নেতার পেটে গুলি লেগেছে বলে জানা গিয়েছে। কে বা কারা ওই তৃণমূল নেতাকে গুলি করে পালাল, সেই বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়। প্রসঙ্গত, ওই লোচনপুর পঞ্চায়েত এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে এক টালমাটাল রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। লোচনপুর পঞ্চায়েতে মোট ১৭ জন সদস্য। গত বছরের মার্চে তাঁদের মধ্যে ৯ জন অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিলেন প্রধানের বিরুদ্ধে। পরবর্তীতে সেই অনস্থা ভোটে অপসারিত হয় তৎকালীন প্রধান। তারপর থেকে প্রধানহীন অবস্থায় পড়ে ছিল লোচনপুর গ্রাম পঞ্চায়েত।
শেষে হাইকোর্টের নির্দেশে মঙ্গলবার পঞ্চায়েতের নতুন প্রধান বাছাইয়ের দিনক্ষণ স্থির হয়। সেই মতো ১৭ সদস্যদের উপস্থিতিতে ভোটাভুটি হয়। প্রাক্তন প্রধান সিনারা বিবির বিরুদ্ধে ১১ জন সদস্য ভোট দেন। অনাস্থা ভোটে জিতে নতুন প্রধান হন সোনালি সিংহ রায়। যিনি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন, তিনি এই নতুন প্রধানকেই সমর্থন করেন বলে জানা গিয়েছে। যদিও এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই বলেই দাবি করেছেন স্থানীয় তৃণমূল ব্লক সভাপতি মোস্তফা সরকার।
তিনি বলেন, ‘১৭ জনের মধ্যে ১১ জন আমাদের দলের সঙ্গে আছেন। বাকি ৬জন আমাদের দলের সঙ্গে নেই। গত বিধানসভা ভোটে তাঁরা দলের হয়ে কাজ না করায় তাঁদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অতএব তাদের সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই।’ তবে এই ঘটনার সঙ্গে ওই ছয়জনের কোনও যোগ রয়েছে কি না, তা নিশ্চিতভাবে বলতে পারছেন না মোস্তফা সরকার।
এদিকে রানিনগরের বিধায়ক সৌমিক হোসেন অবশ্য এই ঘটনায় আঙুল তুলছেন বিরোধীদের দিকেই। যদিও জেলার বিজেপি নেতা লাল্টু দাস পাল্টা দিয়ে বলছেন, ‘এটি তৃণমূলের লুঠের লড়াই। যে টিকে থাকবে সেই টিকিট পাবে। আগামী দিনে কে প্রধান হবে, তা এখন থেকে ঠিক করছে ওরা। সেই কারণেই এই সব চলছে।’