ইসলামপুর: জেলা সফরে যাওয়ার সময় বা ফেরার পথে প্রায়শই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গাড়ি থেকে নেমে আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখেন। শুধু তাই নয়, চায়ের দোকান থাকলে সেখান থেকে চা পান করার পাশাপাশি তেলেভাজা বানিয়ে তা সকলে খাওয়াতেও দেখা যায় তাঁকে। এ ছবি রাজ্যের মানুষের কাছে নতুন নয়। তবে এবার মুখ্যমন্ত্রী নন, সেই রূপে দেখা গেল তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড তথা দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। শনিবার মুর্শিদাবাদের ইসলামপুর কলাডাঙা ব্রিজের কাছে হঠাৎই থামে যায় অভিষেকের কনভয়। রাস্তার পাশের দু’টি চায়ের দোকান। সেখানেই এসে দাঁড়ান তৃণমূল নেতা। কথা বলেন তাঁদের সঙ্গে। প্রত্যেকের সুবিধা-অসুবিধার কথা জেনে তাঁদের ফোন নম্বর নোট করে নেন তিনি।
মদন পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন এই গ্রাম । সেখানেই রাস্তার ধারে চায়ের দোকান চালান মালেকা বিবি আর তাইজুল শেখ। অভিষেককে কাছে পেয়ে কেউ বললেন আর্থিক দুরাবস্থার কথা। কেউ আবার মেয়ের পড়াশোনার সাহায্য চাইলেন। প্রত্যেকের অসুবিধার কথা শুনে নম্বর লিখে নিলেন অভিষেক। মালেকা বিবিকে তৃণমূল নেতা আশ্বাস দিলেন আগামিকালই লোক পাঠাবেন সমস্যার সমাধানে।
এ দিকে, অভিষেক এসেছেন এ খবর চাউর হয়ে গিয়েছে ততক্ষণ। বড়-বড় গাড়ির বহর দেখে ছুটে আসলেন এলাকাবাসী। উঁকি মেরে দেখলেন চায়ের দোকানে বসে রয়েছেন তৃণমূল নেতা অভিষেক। তাঁর জন্য কড়া করে দুধ চা বানাচ্ছেন তাইজুল। সেই চায়ের গ্লাসে চুমুক দিয়ে গ্রামবাসীদের কাছ থেকে অভিষেক শুনছেন অভাব অভিযোগ। একজন এলাকাবাসী বললেন, “স্যর ত্রিপল দেয়নি পঞ্চায়েত।” ততক্ষণে ছুটে এসেছেন এলাকার তৃণমূল নেতা। তিনি যদিও সাফাইয়ের সুরে জানালেন আবাস বাদে সবই করা হয়েছে। ত্রিপলও তিনি পাঠিয়ে দেবেন। এরপর চা পান শেষে গাড়ির উদ্দেশে রওনা দিতে উঠবেন সেই সময় কয়েকজন গ্রামের বৃদ্ধা মহিলা দুটো গাল স্পর্শ করলেন অভিষেকের। দিলেন আর্শীবাদ।
বস্তুত, চায়ের দোকানে জন সংযোগ মুখ্যমন্ত্রীর জন্য নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। তবে অভিষেকের জন্য কিছুটা হলেও নতুন বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের ধারনা ভোটের আগে তৃণমূল উঠে পড়ে লেগেছে মানুষে পালস বুঝতে। সাধারণ ভোটার তাঁরা কী ভাবছেন, সেটা জানার পাশাপাশি দলের নেতা কর্মীরা কী ভাবছেন তাই এখন মুখ্য বিষয়। সেই কারণে নব জোয়ার কর্মসূচিতে মাঠে-ময়দানে নেমে একপ্রকার ঘর গোছাতে ব্যস্ত শাসক শিবির।