শিলিগুড়ি: আরএস(RS) ভাইরাসে আক্রান্ত শিশুদের এবার পৃথক ওয়ার্ডে রাখার ব্যবস্থা করল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। বেডের সমস্যা এড়াতে এবার হাসপাতালে (Hospital) আরও ১৬টি বেড বাড়ানো হয়েছে।
মেডিকেল সুপার সঞ্জয় মল্লিক জানান, ২৪ ঘণ্টা আগেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল। কিন্তু এখন অনেকটাই স্বাভাবিক। আজ নতুন করে ৫ শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। মোট ২২ শিশু চিকিৎসাধীন রয়েছে। অধিকাংশ বেডই এখন খালি। আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে জ্বরের প্রকোপ কমছে। এই মুহুর্তে করোনায় আক্রান্ত কোনও শিশু নেই। একজনের শরীরে আগে সংক্রমণ পাওয়া গেলেও এখনও পর্যন্ত এই ধরনের কোনও খবর পাওয়া যায়নি। যে সকল নমুনা সংগ্রহ করতে দেওয়া হয়েছে কোনও পজ়েটিভ রিপোর্টের খবর আপাতত মেলেনি।
তবে বিষয়টি মানতে নারাজ বিরোধী দলগুলি। বিজেপির সাফ অভিযোগ, পরিসংখ্যান-পরিস্থিতি স্বাভাবিক দেখাতেই এসব করা হচ্ছে প্রশাসনের তরফে। তাঁদের আরও দাবি, একদিকে আক্রান্তদের ছুটি দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে, নতুন করে বাচ্চাদের ভর্তি নেওয়া হচ্ছে না। ফলে বেড ফাঁকা রয়েছে উত্তরবঙ্গ মেডিকেলে। শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালেও একই ঘটনা ঘটেছে। সেখানেও রাতেই অসুস্থ শিশুদের ছুটি দেওয়া হয়েছে।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর ক্রমাগত বাড়ছিল শিশুদের জ্বর। তার ওপর আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠল ডেঙ্গুর প্রকোপ। উত্তরবঙ্গে বেআব্রু হয়ে পড়েছিল শিশু চিকিৎসা পরিষেবা। হাসপাতালের আউটডোরে ক্রমাগত ভিড় বাড়ছিল মা ও শিশুর। সর্দি, কাশি, প্রবল জ্বর ও বমির উপসর্গ নিয়ে বাচ্চারা আসছিল জেলা হাসপাতালে।
১৭ সেপ্টেম্বর পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হয়। নতুন করে কোনও শিশু মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি সেই দিন। তবে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল গুরুতর অসুস্থ না হলে কাউকেই ভর্তি নেওয়া হবে না। ওইদিন খবর মেলে হাসপাতালে ভর্তি থাকা স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত ৬ জন শিশুর মধ্যে ৫ জনই সুস্থ হয়ে উঠেছে। তাদের হাসপাতাল থেকে ছেড়েও দেওয়া হয়েছে।
উত্তরবঙ্গ জুড়ে জ্বর বাড়তেই বিভিন্ন জেলা থেকে নমুনা আসছে শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের ভিআরডিএল-এ। কিন্তু সেখানে আরএস ভাইরাস পরীক্ষা করার ব্যবস্থা নেই। ফলে পরিস্থিতি সামলাতে বাকি পরীক্ষার পাশাপাশি এই ভাইরাস চিহ্নিতকরণ ও পরীক্ষা শুরু করতে রাজ্যের অনুমোদন চেয়েছে ভিআরডিএল।
তবে শিলিগুড়ির পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতে শুরু করলেও বেহাল দশা মালদার। আজ সকালেই অজানা জ্বরের প্রকোপে মৃ্ত্যু হয়েছে ৫ মাসের শিশুকন্যা নাজিমা খাতুনের। সেই মেডিক্যাল কলেজেই গুরুতর অবস্থায় আক্রান্ত আরও ৮ শিশু, এমনটাই জানিয়েছেন হাসপাতালের এমএসভিপি পুরঞ্জয় সাহা।
মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই হাসপাতালে চিকিত্সকদের বিশেষ টিম তৈরি করা হয়েছে। সেই টিম পরীক্ষা করে দেখছে। শুক্রবার থেকে শনিবার সকাল দশটার মধ্যে ৬৪ জন শিশু ভর্তি হয়েছে। পাশাপাশি ৬১ জন শিশু সুস্থ হয়ে বাড়ি চলে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: TMC Leader Murder Case: চঞ্চল-খুনে গ্রেফতার তৃণমূল নিয়োজিত আরও ২ শার্প শ্যুটার!
আরও পড়ুন: Post Poll Violence: পরপর ৩ বার! আবেদন করেও বিচারাধীন বন্দিদের জেরার ছাড়পত্র পেল না CBI