Mamata Banerjee: জীবন দিতে তৈরি আমি, নাগরিকত্ব কাড়তে দেব না: মমতা

TV9 Bangla Digital | Edited By: অবন্তিকা প্রামাণিক

Nov 09, 2022 | 2:21 PM

Nadia: সিএএ নিয়ে ইতিমধ্যে সুর চড়াতে শুরু করেছে বিজেপি। এমন আবহে মুখ্যমন্ত্রীর সফর ঘিরে রাজনৈতিক চাপনোতর তুঙ্গে।

Mamata Banerjee: জীবন দিতে তৈরি আমি, নাগরিকত্ব কাড়তে দেব না: মমতা
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

Follow Us

রাস উৎসবে যোগ দিতে নদিয়ায় পা রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। সোমবার ঠাকুর নগর ঘুরে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী অর্জুন সিং মেঘবাল। সিএএ নিয়ে ইতিমধ্যে সুর চড়াতে শুরু করেছে বিজেপি। এমন আবহে মুখ্যমন্ত্রীর সফর ঘিরে রাজনৈতিক চাপনোতর তুঙ্গে।

  1. তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল নিয়েও কড়া বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘এমএলএ যাঁরা আছেন নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করবেন না। আর কেউ করলে তাকে আমি পার্টিতে স্থান দেব না। আমাদের যাঁরা পঞ্চায়েতে আছেন, ব্লকে,জেলা পরিষদে  আছেন কে বড় হনু আমি না মানুষ?  মানুষ না থাকলে আমি শূন্য। রোজ তৃণমূলের প্রতীককে আমি নমস্কার করি। যার ইগো থাকবে বাড়িতে বসে যান। কাজ করার দরকার নেই।’
  2. মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে কত মানুষ এসেছে। কষ্ট করে সংসার চালিয়েছেন। আজ আমি তাদের নিঃশর্ত জমির দলিল দিচ্ছি। কেন দিচ্ছি? তারা জমি পাওয়ার অধিকার। যে যে জায়গায় উদ্বাস্তুরা যেখানে যেখানে বসে আছেন, তারা সবাই নিঃশর্ত জমির দলিল পাবেন। একটা জায়গা থেকেও উচ্ছেদ করতে দেব না। এটা আমাদের সরকারের সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতি।’
  3. মতুয়াদের উদ্দেশে বার্তা দিয়ে বলেন, ‘আমি মতুয়া ভাই-বোনেদের বলছি, আপনারা এখানকার নাগরিক। পুরোপুরি নাগরিক। আপনাদের উপর কোনও রকম কেউ কিছু করতে পারবে না। মনে রাখবেন আমি বড় মার চিকিৎসা একা করেছি। আপনাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নিতে দেব না। আমি জীবন দিতে তৈরি। নাগরিকত্ব কাড়তে দেব না।’
  4. বুধবার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘২০২৪ এ বিজেপি ক্ষমতায় আসবে না। আসতে পারে না। কারণ আগের বার বিহার-ঝাড়খন্ডে তাদের সরকার ছিল। বিহার-ঝাড়খন্ড কোথাও নেই। কর্নাটকে হারবে। কেরলে হারবে। তামিলনাড়ুতে আমার বন্ধুর সরকার। গুজরাটে আগের বার সব সিট পেয়েছিল। ষাটে ষাট। উত্তর প্রদেশে সব পেয়েছিল। এবার কি মনে করেন সব সিট পাবে?’
  5. মমতার বক্তব্য, ‘আপনারা ভোট দিয়ে এমএলএ নির্বাচন করেন, এমপি নির্বাচন করেন, পঞ্চায়েত নির্বাচন করেন, জেলা পরিষদ নির্বাচন করেন। আপনার ভোটেই তো নরেন্দ্র মোদী জিতেছে। প্রধানমন্ত্রী হয়েছে। রানাঘাটের সব ভোট তো নিয়ে গিয়েছে। উনি তাহলে প্রধানমন্ত্রী হলেন কী করে? আপনাদের যদি ভোটাধিকার না থাকে। আপনাদের যদি ভোটাধিকার না থাকে, তাহলে আমাদের জিতিয়েছেন কী করে? এটা পুরো মিথ্যে কথা।’
  6. NRC ও CAA নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আপনি যদি নাগরিক না হতেন, তাহলে এগুলো কী করে হতো? বিজেপি কিছু লোককে এখান ওখান থেকে দেখে নিয়ে আসতে চায়। তারা বাংলার লোক নয়, মনে রাখবেন। তাদের বাংলায় অনুপ্রবেশ করানোর জন্য, তাদের কাছে নাগরিকত্ব দিয়ে আপনার অধিকারকে ছোট করবে। আমি চাই, মতুয়ারা এখানকার নাগরিক। রাজবংশীরা এখানকার নাগরিক। উদ্বাস্তুরা এখানকার নাগরিক। আদিবাসীরা এখানকার নাগরিক। সংখ্যালঘুরা এখানকার নাগরিক। আপনারা যদি নাগরিক না হন, তাহলে আমিও নাগরিক নই।’
  7. গোবিন্দ ভোগ চালে কেন্দ্রের কর কমানো নিয়ে বলেন, ‘বাংলায় গোবিন্দভোগ বেশি হয় বলে তার উপর ।ট্যাক্স কমিয়ে বাড়িয়ে দিয়েছে বাসমতির উপর।’
  8. এরপর মুখ্যমন্ত্রী দুয়ারে সরকার, লক্ষ্মীর ভান্ডার, স্টুডেন্ড ক্রেডিট কার্ড, স্বাস্থ্যসাথী সহ সরকারের একাধিক পরিষেবার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘নদিয়ার মানুষ ভাল মানুষ। শান্তিপ্রিয় মানুষ। ধর্মপ্রাণ মানুষ। উদ্বাস্তু মানুষ। আর এই মানুষগুলোর মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ায়। আবার বলে বেঙ্গলে ক্যা করবে। ক্যা মানে কী? সিটিজেনশিপ। বুকে হাত দিয়ে বলুন, চাকরি করেন? দোকান আছে? রেশন কার্ড পান? স্বাস্থ্যসাথী পান? লক্ষ্মী ভান্ডার পান? জমি জায়গা আছে? সবই যখন আছে, আপনার অধিকার।’
  9. ‘নির্বাচন আসলে মনে পড়ে ক্যা ক্যা ক্যা। ক্যা নিয়ে আপনাদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করে। নির্বাচন আসলেই তাদের মাথায় এনআরসি ঢোকে। মতুয়াদের নিয়ে রাজনীতি করে। রাজবংশী-পাহাড়ি দিয়ে নিয়ে বাংলা ভাগ করার চেষ্টা করে। তারা করতে চায় না। সবাই এক নয়। নদিয়ায় রানাঘাটের সাংসদ আপনাদের জন্য কিছু করেছে। তাহলে ভোটটা দেন কেন?’
  10. শুধু বিজেপি নয়, পাশাপাশি সিপিএম, কংগ্রেসকে কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনের সময় এরা এক হয়ে যায়। সব রাম-বাম-শ্যাম। জগাই-মাধাই। এ ওর কাছ থেকে কানাঘুষো করে। নানা রকম আদানপ্রদান করে। রাজনীতির সঙ্গে আরও কিছু চলে।’
  11. বিজেপিকে কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রানাঘাটে কী করেছে বিজেপি? নির্বাচন এলে যত মিথ্য়ে কথা। নির্বাচন চলে গেলে ধর্মে-ধর্মে যুদ্ধ।’ একই সঙ্গে যোগ করে বলেন, ‘এখানে হাসপাতাল, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নতি আমরা করেছি। ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাস করেছি। ইসকনের জন্য ৭০০ একর জমি দিয়েছি। কন্যাশ্রী বিশ্ব বিদ্যালয় আমরা দিয়েছি। মাটির পুতুল থেকে তাঁত আমরা দিয়েছি।’
  12. এরপর মমতা জানান, ‘বহুদিন আগে কৃষ্ণনগেরর মানুষ আমাদের দুটো লোকসভা দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন দুটো নির্বাচনে পর পর মাত্র কৃষ্ণনগর সিট আমরা পেয়েছি। রানাঘাট পায়নি। মাত্র বিধানসভাতেও একটা আসন পেলাম। কারণটা কী ভেবে দেখেছেন কি? আমি আপনাদের কাছে একটা অনুরোধ করব, বিজেপি কী এমন করল, যে মিথ্যে কথা বলে লোকসভা সিট নিল। বিধানসভার সিট নিল। কাজ কিছু করেছে? একটাও কিছু করেছে?’
  13. মুখ্যমন্ত্রীর আর্জি, ‘মশা বাড়তে দেবেন না। কোথাও আবর্জনা যেন জমে না থাকে। জল না জমে থাকে। পুজো গিয়েছে। অনেক আবর্জনা জড়ো হয়েছে।’
  14. এ দিন কৃষ্ণনগরে  মুখ্য়মন্ত্রী বলেন, ‘কৃষ্ণনগর, মুর্শিদাবাদ, বনগাঁ, রানাঘাট, শান্তিপুর খুব প্রিয় জায়গা। প্রতিবছর কৃষ্ণনগর আসি। করোনার সময় একটু সমস্যা হয়েছিল। এখন ডেঙ্গি  একটু আছে। যত ঠান্ডা পড়বে ডেঙ্গি কমবে। তাই আমি পঞ্চায়েত, পুরসভার কর্মীদের বলব আপনারা সতর্ক থাকুন। এলাকা পরিষ্কার করুন।
Next Article