শান্তিপুর: বাবার বয়স ৪৫ বছর। মায়ের বয়স ৩৭ বছর। আর ছেলের? ১২৩ বছর। রেশন কার্ডের (Ration Card) হিসেব অন্তত এমনই বলছে। ১৪ বছরের ছেলের বয়স রেশন কার্ডে রয়েছে ১২৩। আর এই বয়সের জটিলতা নিয়েই নাজেহাল অবস্থা নদিয়ার শান্তিপুরের (Shantipur) কর্মকার পরিবারের। শান্তিপুরের বাবলা গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা সাধন কর্মকার। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ। পেশায় তাঁত শ্রমিক সাধন। তাঁত বুনোই কোনওক্রমে সংসার চলত। কিন্তু এখন বিয়ে করে ছেলেপুলে হওয়ায় শুধু তাঁত বোনার টাকায় আর সংসার চলে না। তাই পরিবার নিয়ে ভিন রাজ্যে পাড়ি দিয়েছেন সাধনবাবু। এখন তিনি পরিবার নিয়ে থাকেন মহারাষ্ট্রে। সেখানেই শ্রমিকের কাজ করেন। কিন্তু সেখানেও শান্তি নেই। ছেলের বয়স নিয়ে এই সমস্যার কারণে কার্যত নাজেহাল অবস্থা কর্মকার পরিবারের।
সাধনবাবুর ছেলে সূর্য কর্মকার। ছেলের রেশন কার্ডের জটিলতা এই প্রথম নয়। এর আগেও রেশন কার্ড নিয়ে ঝক্কি পোহাতে হয়েছে তাঁদের। এর আগে নাম নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিল ছেলের রেশন কার্ডে। সূর্য কর্মকারের বদলে নাম এসেছিল সুব্রত কর্মকার। এমনই দাবি পরিবারের। পরে অবশ্য সরকারি অফিসে গিয়ে নাম ঠিক করানো হয়েছিল। কিন্তু এবার আবার নতুন জটিলতা বয়স নিয়ে। আর তাই মহারাষ্ট্র থেকে ছুটে আসতে হয়েছে সূর্যর মা শ্রাবণী কর্মকারকে।
সাধনবাবুর স্ত্রী জানাচ্ছেন, এর আগেও একাধিকবার বিষয়টি নিয়ে বিডিও অফিসে জানানো হয়েছিল। কিন্তু এখনও কোনও সুরাহা হয়নি। সেই কারণে মহারাষ্ট্র থেকে এসে আবারও তাঁরা বিডিও অফিসে গিয়েছিলেন। কিন্তু শ্রাবণী দেবীর কথায়, এই সমস্যা সমাধান হতে অন্তত দুই মাস সময় লাগবে বলে জানানো হয়েছে তাঁকে। এদিকে ছেলের রেশন কার্ডের এই জটিলতার কারণে নানারকমভাবে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাঁদের।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় বিডিও প্রণয় মুখোপাধ্য়ায়ের সঙ্গে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি। যদিও এই বিষয়ে ওই এলাকার রেশন ডিলার ব্রজলাল চৌধুরী জানান, ‘কিছু একটি ভুল ছিল আমার জানা ছিল। তবে বয়সের এতটা তারতম্য ছিল, সেটা জানতাম না। তবে এইসব বিষয়ে ভুলের ক্ষেত্রে ঠিক করতে বেশিদিন সময় লাগে না। বিডিও অফিসের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদনপত্র জমা দিলেই খুব তাড়াতাড়ি ঠিক হয়ে যায়।’ কর্মকার পরিবারের সঙ্গে তিনি নিজেই যোগাযোগ করে এই সমস্যার দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।