নদিয়া: নদিয়ার নিহত তৃণমূল নেতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেন মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস। পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন তিনি। ঘটনায় তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের অভিযোগ উঠে এসেছে। সেই প্রসঙ্গের প্রেক্ষিতে উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন, “সেটা তো দল ব্যবস্থা নেবে যদি সত্যিকারের আইনের বিচারে যদি দোষী সাব্যস্ত হয় তাহলে সেটা তো আলাদা নয়!” এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই জেলা পরিষদের সদস্য টিনা সাহা ভৌমিক-সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। নওদা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে পরিবার। পরিবারের তরফে সিআইডি তদন্তের দাবি তোলা হয়েছে। মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন, “যাঁরা অপরাধী তাঁরা কেবল খুনের কারণে অপরাধী নন, বরং একটা শক্ত সংগঠনকে ধ্বংস করার ক্ষেত্রেও অপরাধী।”
এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা খুনে প্রথম থেকে সোচ্চার এলাকার বিধায়ক তাপস সাহা। তাপস সাহা বলেন, “গত বিধানসভা নির্বাচনে আমি নারায়ণপুর ১ ও ২ থেকে লিড পেয়েছিলাম। ২০ হাজার ভোটে লিড পেয়েছিলাম। তৃণা সাহা ভৌমিক জেলা পরিষদের সদস্যা বিজেপির হয়ে ভোট করিয়েছিলেন। তিনি মতিরুলকে বলেছিলেন চুপচাপ বসে থাকতে। কিন্তু তা শোনেননি। সেই থেকেই শত্রুতা। ইট ভাটা নিয়ে গন্ডগোল হয়। হাবিব বলে একজন ব্লক সভাপতি এর সঙ্গে রয়েছে।” এর নেপথ্যে জেলা পরিষদের সদস্য, হাবিবের নাম উঠে আসছে। ইটভাটার দখল নিয়েই বিবাদের জেরে খুন বলে অভিযোগ করছেন সংখ্যালঘু সেলের সম্পাদক মিঠু সাহু। তিনি বলেন, “আমাদের জেলা পরিষদের সদস্যা তৃণা সাহা ভৌমিক আর হাবিবের শেয়ার রয়েছে ওই ইটভাটায়। তাঁরাই চক্রান্ত করে এসব করেছেন। হাবিব নদিয়া ক্রিমিন্যাল।”
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নওদায় খুন হন তৃণমূল নেতা মতিরুল ইসলাম। তিনি নদিয়ার নারায়ণপুর-২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের স্বামী। নিজেও করিমপুর ২ ব্লকের তৃণমূল সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি। । ছেলে নওদার একটি বেসরকারি স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করে সে। তাকে দেখতে মাঝেমধ্যেই নওদায় যেতেন মতিরুল। নওদা থেকে নদিয়া ফেরার পথেই তিনি আক্রান্ত হন।
সেদিন কয়েক জন দুষ্কৃতী তাঁর পথ আটকায়। প্রথমে তাঁকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয়। তিনি পরে গেলে তাঁকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি করা হয়। মৃত্যু নিশ্চিত করতে হাতের শিরা কাটা হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই তৃণমূল নেতাকে উদ্ধার করে প্রথমে আমতলা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঘটনাকে ঘিরে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। ইতিমধ্যে এই ঘটনায় সিআইডি তদন্তের দাবি জানিয়েছে পরিবার।