নদিয়া: তিলোত্তমার ঘটনায় তোলপাড় হয়েছিল গোটা রাজ্য। পথে নেমেছিলেন চিকিৎসকরা। গোটা রাজ্য তোলপাড় হয়েছিল। কিন্তু এবার তো আরও ভয়ানক ঘটনা। এক মহিলা চিকিৎসককে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল হাসপাতালের সুপারের বিরুদ্ধে। বললেন, “কথা না শুনলে দ্বিতীয় তিলোত্তমা ঘটিয়ে দেব।” খোদ সুপারের মুখে এ কথা শুনে চরম আতঙ্কে ওই মহিলা চিকিৎসক। এরপর থেকেই প্রশ্ন উঠছে চিকিৎসকদের কাছেও কি সুরক্ষিত মহিলা চিকিৎসকদের নিরাপত্তা।ঘটনাটি নদিয়ার শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালের।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, গত তিন মাস আগে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে প্যাথলজি বিভাগের সিনিয়র রেসিডেন্ট হিসেবে কাজে যোগদান করেন ওই মহিলা চিকিৎসক। তাঁর অভিযোগ, কাজে যোগদানের পর থেকেই হাসপাতাল সুপার ডক্টর তারক বর্মণ তাঁর উপর বিভিন্নভাবে মানসিক নির্যাতন করতেন। প্যাথলজি ডিপার্টমেন্টের কাজ করলেও তাঁকে বল প্রয়োগ করে ইমার্জেন্সিতে কাজ করান। পাশাপাশি তাঁকে জোর করে নাইট ডিউটি করানো হতো বলে খবর। তিনি প্রতিবাদ করতে গেলে তাঁকে হুমকি দিতেন হাসপাতাল সুপার। পাশাপাশি তিনি যখন নাইট ডিউটি করতে অস্বীকার করেন, তখন তাঁকে দ্বিতীয় তিলোত্তমা ঘটনা ঘটানোর হুমকি দেন। এরপরেই রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পড়ে ওই মহিলা চিকিৎসক। অবশেষে তিনি নিরুপায় হয়ে স্বাস্থ্য দফতর এবং থানার দ্বারস্থ হন। শান্তিপুর থানায় অভিযুক্ত তারক বর্মণের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি চাইছেন অবিলম্বে তাঁকে যেন এই হাসপাতাল থেকে অন্যত্র স্থানান্তরিত করে স্বাস্থ্য দফতর। মহিলা চিকিৎসক বলেন, “আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। অর্ডার যদি ফলো না করো তাহলে দ্বিতীয় তিলোত্তমার ঘটনা হতে চলেছে। আমায় এটাই বলে চলে গেছে। আমি প্যাথলজিস্ট। আমি এখানে আসার পর প্যাথলজি বিভাগে দিতে চাইছেন না। এত কাজের প্রেশার সেই কারণে রোস্টার কমিটি আর সুপারকে জানাই। তারা বিন্দুমাত্র মাথা ঘামায়নি। আমায় যেন ট্রান্সফার করে দেয়।”
তবে ওই মহিলা চিকিৎসকের তোলা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শান্তিপুর হাসপাতাল সুপার তারক ব। তিনি বলেন, “সম্পূর্ণ মিথ্যা।” এরপর যদিও, তিনি আর কিছু বলতে চাননি। শুধু বলেছেন, যা বলার সিএমওএইচ বলবেন। মহিলা চিকিৎসকের অভিযোগের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন জেলা স্বাস্থ্য অধিকারীক জ্যোতিষ চন্দ্র দাস। তিনি বলেন, “আমি ওই মহিলা চিকিৎসকের অভিযোগ হাতে পেয়েছি। ইতিমধ্যেই তা জেলা স্বাস্থ্য দফতরে পাঠিয়ে দিয়েছি। তবে ওই মহিলা চিকিৎসক নিজেও মানসিক রোগের ওষুধ খান। আমি জানিয়েছি ওই চিকিৎসককে স্বাস্থ্য দফতর অন্যত্র স্থানান্তরিত করলে আমার কোন আপত্তি নেই।”