নদিয়া: দলীয় কার্যালয় থাকবে কার দখলে? তাই নিয়ে দ্বন্দ্ব। ভোটের আগে তালা পড়েছে কার্যালয়ে। যা নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে। নদিয়ার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী কৃষ্ণগঞ্জের মাজদিয়া এলাকার ঘটনা। এই অন্তর্দ্বন্দ্ব আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসকদলের ভোট বাক্সে প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা রাজনৈতিক মহলের একাংশের। তৃণমূলের কার্যালয়ে তালা ঝোলানো নিয়ে শাসকদলকে কটাক্ষ করেছে গেরুয়া শিবির।
জানা গিয়েছে, মাজদিয়ার এই কার্যালয়ের দুটি চাবি রয়েছে। একটি চাবি ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোষ চৌধুরীর কাছে থাকে। অন্য চাবিটি কৃষ্ণগঞ্জ ব্লক তৃণমূল যুব কংগ্রেস সভাপতির কাছে থাকে। বৃহস্পতিবার নদিয়া দক্ষিণ জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নির্দেশে কার্যালয়টিতে কর্মী সমর্থকদের নিয়ে একটি সাংগঠনিক আলোচনা সভা করতে আসেন ওই এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতৃত্বরা। অভিযোগ, সেই সময় তাঁদের কাছে থাকা চাবি দিয়ে দলীয় কার্যালয় ভবনের মূল গেটের তালা খুলতে না পেরে এক প্রকার হতবাক হয়ে যান তাঁরা। তালা খুলতে না পেরে আলোচনা সভার ব্যাঘাত ঘটে।
তাঁদের অভিযোগ, দলীয় কার্যালয়ের মূল গেটের তালা বদলে দেওয়া হয়েছে। তালা বদল হলে একটি চাবি ব্লক যুব কংগ্রেস সভাপতির কাছে পাঠানো উচিত ছিল। কারণ দীর্ঘ ছয় মাস ধরে এই নিয়ম হয়েছে বলে দাবি। কিন্তু উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ব্লক সভাপতি তালাটি বদলে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন উপস্থিত তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতাকর্মীরা। পাশাপাশি এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতাকর্মীদের মধ্যে। দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। অভিযোগ, এর আগেও স্থানীয় আইএনটিটিউসির নেতা কর্মীরা তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে দলীয় আলোচনা করতে এসে কার্যালয়টির তালা খুলতে ব্যর্থ হন। যার ফলে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয় ওই এলাকার আইএনটিটিউইসি কর্মী সমর্থক সহ উপস্থিত তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা কর্মী সমর্থকদের মধ্যে। ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতির লোকজনই এই ঘটনার জন্য দায়ী বলে দাবি করেন উপস্থিত আইএনটিটিউসি ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা কর্মী সমর্থকেরা।
যদিও এ ব্যাপারে কৃষ্ণগঞ্জ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোষ চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি মুখ খুলতে চাননি। শুধু বলেন, চাবিটা তাঁর কাছে আছে।
পার্টি অফিসের তালা খোলাকে কেন্দ্র করে কৃষ্ণগঞ্জ মাজদিয়া এলাকায় তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল ফের একবার প্রকাশ্যে চলে এল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। পাশাপাশি এই ঘটনা পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় শাসকদলের ভোট বাক্সে সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে বলেও ধারণা তাদের। তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অশোক হালদার বলেন, ব্লক সভাপতি এমন কাজ করে দলকে অস্বস্তিতে ফেলেছেন।
এই নিয়ে শাসকদলকে কটাক্ষ করে বিজেপির প্রাক্তন মণ্ডল সভাপতি প্রণব সরকার বলেন, এদের গোষ্ঠীকোন্দল নতুন কিছু নয়। সামান্য পার্টি অফিসের তালা খোলা নিয়ে নিজেদের কার কত ক্ষমতা সেটা জাহির করার চেষ্টা হচ্ছে। একইসঙ্গে তিনি দাবি করেন, কৃষ্ণগঞ্জ ব্লক বিজেপির শক্ত ঘাঁটি। আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি সমস্ত জায়গায় জয়লাভ করবে।