নদিয়া: শনিবার সাত-সকালে নদিয়ার তেহট্টের বিধায়ক তাপস সাহা ঘনিষ্ঠ স্থানীয় তৃণমূল নেত্রী ইতি সরকারের (Iti Sarkar) বাড়িতে পৌঁছয় সিবিআই। গোটা বাড়ি ঘিরে ফেলেন কেন্দ্রীয় জওয়ানরা। চলে তল্লাশি। জেরা। ততক্ষণে ভিড় বেড়েছে তৃণমূল নেত্রীর পাড়ায়। উৎসুক জনতার মনে একটাই প্রশ্ন এত সকালে এলাকায় কেন এসেছেন গোয়েন্দারা? তাহলে কী…, এই সব আলোচনার মধ্যেই প্রায় ২ ঘণ্টা পর ইতিদেবীর বাড়ি থেকে বের হন গোয়েন্দারা। তাঁদের চলে যাওয়ার পরই হাসি মুখে সংবাদ মাধ্যমের সামনে এলেন ইতি। জানালেন যে, সিবিআই আধিকারিকরা বুঝেছেন তিনি নিজেই কতটা অসহাস।
এ দিন, টিভি ৯ বাংলার মুখোমুখি হয়ে ইতি সরকার বলেন, “আমি যেহেতু ব্লকের নেত্রী সেই কারণে আমার বাড়িতে কিছু তথ্য জানতে এসেছেন। কালকে তাপস সাহার বাড়িতে এসেছিলেন ওরা। সেই কারণে আজ আমায় জিজ্ঞাসাবাদ করছে।” তৃণমূল নেত্রী বলেন, “ওনারা আমায় জিজ্ঞাসা করছিলেন তাপস সাহার নামে যে অভিযোগগুলি উঠেছে সেগুলি সত্যি কি না? আমি বলেছি, আমি কী করে জানব? আমি তো এইসবের সঙ্গে জড়িত নই। আমার সঙ্গে শুধু ওনার মিটিং মিছিলে দেখা হয়। আমার চাকরির দরকার নেই, আমার স্বামীরও চাকরির দরকার নেই।” এখানেই শেষ নয়,আজ তিনি জানান যে কোনও সরকারি স্কুলে তিনি চাকরি করেন না। ইতি বলেন, “একটি সেল্ফ-হেল্ফ গ্রুপের সঙ্গে কাজ করি। সেখানে সেলাই করি।”
আজকে গোয়েন্দাদের তদন্ত প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ইতি সরকার তুলে ধরেন নিজের অসহয়তার কথা। এমনকী তিনি যে দরিদ্র তা গোয়েন্দা কর্তারাও বুঝেছেন বলে দাবি করেন তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য। বলেন, “ওনারা যাওয়ার সময় আমায় নমস্কার করে গেলেন। নিজেরাও হয়ত ভাবছেন এ কার বাড়িতে আমরা এসেছি। উনি তো অসহায়।” সঙ্গে এও বলেন, “সোমবার আমার মেয়ের জন্মদিন। কোনওরকমে পায়েস রান্না করে খাওয়াব। আসলে আমার অনেক ঋণ রয়েছে। গোল্ড লোনও রয়েছে।”
তাপস সাহা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ইতি বলেন, “উনি আমার কাকু। আমার বাবার সমতুল্য। আমার স্বামীকে জামাই বলে ডাকে। মেয়েকে নাতনি বলে ডাকে। ওনার ছেলেকে আমি ভাই বলে ডাকি। তবে কাকু নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে জড়িত কি না বলতে পারব না।”
প্রসঙ্গত, শুক্রবার থেকে তেহট্ট বিধানসভায় তল্লাশি অভিযান চালু করে সিবিআই আধিকারিকরা। নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে প্রথমে তেহট্টের বিধায়ক তাপস সাহার বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালান তাঁরা। গোয়েন্দারা ১৫ ঘণ্টা পর পৌঁছন নদিয়ার বয়ারবান্ধায়। সেখানে তাপস ঘনিষ্ঠ অপর তৃণমূল নেতা প্রবীর কয়ালের বাড়িতে যান তাঁরা। সেখান থেকে গোয়েন্দারা সটান পৌঁছন আসতুল্লানগরে ইতি সরকারের বাড়িতে।