তেহট্ট: তৃণমূলেরই কেউ কেউ তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেছেন। সিবিআই-এর ১৫ ঘণ্টা তল্লাশি শেষে সংবাদমাধ্যমের সামনে এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ আনলেন নদিয়ার তেহট্টের বিধায়ক তাপস সাহা। শুক্রবার বিকেল থেকে বিধায়কের বাড়িতে শুরু হয় কেন্দ্রীয় সংস্থার তল্লাশি অভিযান। একটানা জিজ্ঞাসাবাদ চলে তৃণমূল বিধায়কের। বাড়ি থেকে কার্যালয়, কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে রাতভর তল্লাশি চালান সিবিআই আধিকারিকরা। শনিবার সকালে বেরিয়ে যান আধিকারিকরা। নথি সংগ্রহের জন্য বিধায়কের বাড়িতে ল্যাপটপ ও প্রিন্টার নিয়ে গিয়েছিল সিবিআই। প্রচুর নথিপত্র উদ্ধার হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
তল্লাশি শেষে তাপস সাহার অভিযোগ, এই তদন্ত প্রভাবিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তৃণমূলের যুব নেতাদের নাম বলানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন তাপস সাহা। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘তদন্তে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করেছি।’ তাঁর দাবি, তৃণমূলের স্থানীয় যুব নেতা মলয় বিশ্বাস বা মিঠুর নাম শোনা গিয়েছে তদন্তকারীদের মুখে। একদম পরিকল্পনামাফিক সিবিআই এসেছিল বলেও উল্লেখ করেছে তিনি।
তবে এই পরিস্থিতিতে দল যে তাঁর পাশে নেই, সে কথা স্পষ্ট জানিয়েছেন তাপস সাহা। তিনি বলেন, ‘আমি চক্রান্তের শিকার’, কার চক্রান্ত? তাপস বলেন, ‘বিজেপিও চক্রান্ত করেছে, তৃণমূলও করেছে।’ দলের কেউ কেউ যে তাঁর নাম বলেছেন, সে কথা নাকি শোনা গিয়েছে সিবিআই-এর মুখেও। তিনি জানান, এখনও পর্যন্ত দল তাঁর পাশে দাঁড়ায়নি। দলের কোনও নেতা কথাও বলেননি তাঁর সঙ্গে। তবে কি দলের প্রতি বীতশ্রদ্ধ তিনি? তাপসের স্পষ্ট জবাব, ‘আমি লড়াই করা মানুষ। দল ছাড়ব না। এটাকেই তো রাজনীতি বলে। যাঁরা চক্রান্ত করেছে তাঁদের বিরুদ্ধে লড়াই জারি থাকবে।’
শুধুমাত্র বাড়িতে নয়, বিধায়ককে নিয়ে বেতাই কলেজেও গিয়েছিল সিবিআই। তাপস সাহা ওই কলেজের পরিচালন সমিতির সদস্য বলে জানা গিয়েছে। তাপস জানিয়েছেন, বেতাই কলেজে গিয়ে একাধিক ঘরে তল্লাশি চালিয়েও কিছু পায়নি সিবিআই। খতিয়ে দেখা হয় প্রিন্সিপ্যালের ঘর। কলেজে কিছু পাওয়া যায়নি বলেই দাবি বিধায়কের। তাঁর দুটি ফোন, তাঁর ছেলের কিছু নথি নিয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিধায়ক। এছাড়া নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাঁর ভাইঝির চাকরির নথি। স্কুলে চাকরি করেন বিধায়কের ভাইঝি। তাপস সাহার দাবি, ভাইঝি মেধাবী, পরীক্ষা দিয়েই চাকরি পেয়েছেন।
তাপস সাহার বিরুদ্ধে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল আগেই। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্ট তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়। সেই মতো শুক্রবার তল্লাশি চালাতে হাজির হয় তদন্তকারী সংস্থা।