নদিয়া: মাঠের একপ্রান্তে পরিত্যক্ত একটা বাড়ি। দীর্ঘদিন ভগ্নদশায় পড়ে থাকা ইটের খাঁজে-খাঁজে উঁকি দিয়েছে আগাছা। গ্রামের লোকও সচরাচর অমুখো হয় না। নাহ! সে বাড়ি কোনও হানাবাড়ির তকমা পায়নি। নেহাতই সাপ-খোপের ভয়। তবে এলাকার ছেলে ছোকরাদের যাতায়াত ছিল। মদ্যপানের আসর জমত মাঝে মধ্যেই। কিন্তু সেই বাড়ি ও সংলগ্ন এলাকা যেন ক্রমশ নিজেকে মুড়ে ফেলছে রহস্যে। কারণ থেকে থেকেই সেখানে মিলছে অল্প বয়সী যুবদের লাশ। ঠিক যেমন রবিবার সকালেও বাড়ির কাছে মাঠে ফের পড়ে থাকতে এক যুবকের নিথর দেহ। কেন ওই এলাকাতে বারবার মিলছে লাশ? প্রশ্নের উত্তর ভাবতে গিয়ে যেন গায়ে কাঁটা দিচ্ছে গ্রামবাসীদের।
নদিয়ার পলাশীপাড়ায় রবিবার ভোর ছিল ফের এক আতঙ্কের সূর্যদয়। বড় নলদহ কলোনি মাঠে আবারও এক যুবকের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে একাধিক মদের বোতল। চিত হয়ে পড়ে থাকা দেহের মাথায় আঘাতের চিহ্ন। এই নিয়ে বেশ কয়েকবার ওই একই জায়গায় মৃতদেহ উদ্ধার হল।
এ দিকে, ফের দেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পলাশীপাড়া থানার পুলিশ। তারা এসে দেহটি উদ্ধার করে নিয়ে যায় প্রীতিময়ী গ্রামীণ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন ওই যুবককে। পরে ছুটিকে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয় শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, মৃত যুবকের নাম ভাষা শেখ(৩৫)। মুর্শিদাবাদ জেলার রেজিনগর এলাকার বাসিন্দা তিনি।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই পরিত্যক্ত বাড়ির সংলগ্ন মাঠে মদের আসরে যোগ দিয়েছিলেন ভাষা। নেশায় বুঁদ হয়ে পড়েছিলেন রীতিমত। সেখানেই খুন করা হয়েছে তাকে। কারণ হিসেবে উঠে আসতে পারে পুরনো শত্রুতা। তবে নিশ্চিত হতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে গ্রামবাসীকে। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়।
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই পলাশীপাড়া থানা এলাকায় একটি মৃতদেহ উদ্ধার হয়। এমনকী এই দিনের ঘটনাস্থল থেকে মাঝেমধ্যেই মৃতদেহ উদ্ধার হচ্ছে। ফলে সামগ্রিক বিষয়টি নিয়ে চিন্তার ভাঁজ সাধারণ মানুষের কপালে।