কলকাতা : আবাস যোজনার পাশাপাশি, বাক স্বাধীনতা নিয়েও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। শুক্রবার রাজ্যসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তাঁর মুখে উঠে এল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্রের প্রসঙ্গ। রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ জহর সরকার কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বাক স্বাধীনতা হরণ করার অভিযোগ তুলে সরব হন। তাঁকে জবাব দিতে গিয়ে অম্বিকেশের কথা মনে করান নির্মলা। তিনি উল্লেখ করেন, জহর সরকার যে রাজ্য থেকে সাংসদ নির্বাচিত হয়ে এসেছেন, সেই রাজ্যে একটি ছবি ফরওয়ার্ড করার জন্য এক অধ্যাপককে জেল খাটতে হয়েছিল। উল্লেখ্য, তৃণমূল জমানার শুরুর দিকেই এই অম্বিকেশের ঘটনা অস্বস্তিতে ফেলেছিল সরকারকে। একটি মেইলে কার্টুন ফরওয়ার্ড করার পর তাঁকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। এক রাত জেলেও থাকতে হয়েছিল তাঁকে।
অর্থমন্ত্রী এই প্রসঙ্গের উল্লেখ করার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে রাজ্য সরকারের পাশাপাশি কেন্দ্রের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তুললেন অধ্যাপক। তিনি বলেন, ‘২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর, তাদের সিদ্ধান্ত ছিল বাক স্বাধীনতা বন্ধ করে দেওয়া হবে। বিরোধী মুক্ত রাজ্য করার কথা ভেবেছিল তারা। আমি তারই অংশ হয়ে গিয়েছিলাম।’ সেই প্রসঙ্গেই বরুণ বিশ্বাস, সুদীপ্ত গুপ্তর কথাও উল্লেখ করেন অম্বিকেশ মহাপাত্র। তাঁর দাবি, সরকারের সেই পরিকল্পনার শিকার হয়েছিলেন অনেকেই। এমনকী নির্বাচন সময়কালে বুথ দখল বা ভোট কারচুপির যে অভিযোগ সামনে আসে, সেটাও ওই বাক স্বাধীনতা হরণের পরিকল্পনার অংশ বলেই উল্লেখ করেছেন তিনি।
তবে বিজেপি তথা কেন্দ্রীয় সরকারও যে একই দোষে দোষী, তেমনটাই দাবি করেছেন অম্বিকেশ। অধ্যাপক বলেন, ‘কেন্দ্রের শাসক দলে যারা আছে, তারাও যে বাক স্বাধীনতা হরণ করছে এমন অনেক উদাহরণ আছে। অনেক বিদ্বান মানুষ, মানবাধিকার কর্মীকে বিভিন্ন অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে।’ পারস্পরিক দোষারোপ চলছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এই প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বিষোদগার করেছেন বাংলার বিরুদ্ধে। লোকসভা ও রাজ্যসভায় মিথ্যা তথ্য তুলে ধরেছেন। আমি তার প্রতিবাদও জানিয়েছি।’ আর বাক স্বাধীনতা প্রসঙ্গে বিবিসি-র তথ্যচিত্র প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বিজেপিকে পাল্টা তোপ দাগেন শান্তনু। তিনি বলেন, ‘বিরোধীদের কন্ঠরোধ করে যারা, স্বৈরাচারী গণতন্ত্রের কথা তার মুখে শোভা পায় না।’