ব্যারাকপুর : ৩০০ বছরের পুরনো বাড়ি শিরোমনি। ঐতিহ্যবাহী এই বাড়ির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বহু ইতিহাস। অনেক খ্যাতনামা মানুষের স্মৃতিও জড়িয়ে রয়েছে এই বাড়ির সঙ্গে। কিন্তু, সেখানেই এই ঘটনা ঘটবে তা ভাবতে পারেননি প্রতিবেশীরা। গুণাক্ষরেও কিছু টের পাননি বাড়ির মালিকেরাও। লজ্জায় ক্যামেরার সামনে নামটুকুও বলতে চাইছেন না তাঁরা। এখানেই ফ্ল্যাট কিনে উঠে এসেছিলেন অধ্যাপক অমিতাভ দাস। থাকতেন পরিবার নিয়ে। তাঁর ফ্ল্যাট থেকেই শুক্রবার ৩২ লক্ষ টাকা (32 Lakhs Recovered) উদ্ধার করেছে পুলিশ। অভিযোগ, স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের ছাত্র-ছাত্রীদের বিভিন্ন কলেজে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা তুলতেন অমিতাভ দাস। ভুয়ো সাটিফিকেট বের করে দিতেন লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে শুক্রবার তাঁর ফ্ল্যাটে হানা দিয়েছিল ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটর (Barrackpore Police Commissionerate) গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকরা। রাতভর চলে তল্লাশি। উদ্ধাোর হয়ে ৩২ লক্ষ টাকা। যা দেখে চোখ ছানা বড়া হয়ে যাচ্ছে এলাকার মানুষের।
এত টাকা বাড়িতে থাকে কী করে? কোথা থেকে এল টাকা! শুধু বাড়িতেই ৩২ লক্ষ, তাহলে ব্যাঙ্কে কত টাকা থাকতে পারে? অভিযুক্ত অমিতাভ দাস কী ED-CBI এর স্কানারে ছিলেন? এ সব প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে খড়দহের নাথুপাল ঘাট রোডের বাসিন্দাদের মনের মধ্যে। এখানেই রয়েছে শিরোমনি আবাসন। আবাসনের বাসিন্দারা জানাচ্ছেন যা ঘটল তাতে লজ্জায় তাঁদের মাথা কাটা যাচ্ছে। তাঁদের স্পষ্ট বক্তব্য, এলাকায় খুব একটা কারও সঙ্গে মিশতেন না অভিতাভ। সবাই তাঁকে অধ্যাপক হিসাবেই জানতেন। সেই অধ্যাপকই যুক্ত অসৎ কাজের সঙ্গে? স্বপ্নেও ভাবতে পারছেন না তাঁরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই আবাসেনরই এক বাসিন্দা বলেন, “আমরা এই আবাসনের মালিক। এখানেই ওনারা ফ্ল্য়াট কিনছিলেন আড়াই বছর আগে। ওনারা বরাবরই খুব ভাল ব্যবহার করতেন আমাদের সঙ্গে। আচরণও খুব ভাল। ভদ্র মানুষের মতোই থাকতেন। সে কারণেই আমরা কোনওদিন কিছু আঁচ করতে পারিনি। এরকম একটা ঘটনা ঘটতে পারে তাই আমরা কোনওদিন ভাবতেই পারিনি। আমরা শুনেছি উনি অনেক টাকা বেতন পেতেন। কলেজে অধ্যাপনার কাজ করতেন। তবে টাকার বিষয়ে আমরা কখনও কিছু কোনওদিন জানতে পারিনি। তদন্তকারী পুলিশ অফিসাররা সবাই সিভিল ড্রেসে এসেছিলেন। তাই প্রথমে আমরা কিছু বুঝতে পারিনি কী হচ্ছে। পরে শুনি ৩২ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছে। এই আবাসনের সঙ্গে আমাদের ৩০০ বছরের ঐতিহ্য জড়িয়ে আছে। সেখানে এই ঘটনা ঘটবে ভাবতেই পারিনি।”