Kamarhati: ফের ডায়ারিয়া কাড়ল তাজা প্রাণ, পৌরসভার জল ‘পানের অযোগ্য’ দাবি স্থানীয়দের

tista roychowdhury |

Sep 26, 2021 | 8:32 PM

Diarrhoea: জানা গিয়েছে, মহম্মদ মোমতাজ আহমেদ নামে ওই ব্যক্তি বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। প্রচণ্ড পেটে যন্ত্রণা বমি ও অবিরাম মলত্যাগের মতো উপসর্গ তাঁর দেখা গিয়েছিল।

Kamarhati: ফের ডায়ারিয়া কাড়ল তাজা প্রাণ, পৌরসভার জল পানের অযোগ্য দাবি স্থানীয়দের
মৃত ব্যক্তি, নিজস্ব চিত্র

Follow Us

উত্তর ২৪ পরগনা: ফের ডায়ারিয়ার (Diarrhoea) কোপ কামারহাটিতে। এ বার মৃত্যু হল এক বছর পঁয়ত্রিশের ব্যক্তির। জানা গিয়েছে, মহম্মদ মোমতাজ আহমেদ নামে ওই ব্যক্তি বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। প্রচণ্ড পেটে যন্ত্রণা বমি ও অবিরাম মলত্যাগের মতো উপসর্গ তাঁর দেখা গিয়েছিল। কামারহাটি পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে দাশুবাগান এলাকার ঘটনা।

মৃতের পরিবারের তরফে জানা গিয়েছে,  শনিবার, মহম্মদকে কামারহাটির সাগর দত্ত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু, চিকিত্‍সক না থাকায় রোগীকে ফিরে আসতে হয় বলে অভিযোগ। গতকাল রাতেই ফের অবস্থার অবনতি হওয়ায় ফের মহম্মদকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিত্‍সা চললেও শেষ রক্ষা হয়নি। রবিবার দুপুরে মারা যান তিনি। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পৌরসভার জল শোধন হয়নি। সেখান থেকেই ফের মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে ডায়ারিয়ার (Diarrhoea) বীজ।

স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, “পৌরসভার কাছে আমাদের আবেদন দয়া করে পানীয় জল শোধনের ব্যবস্থা করুন। অল্প বৃষ্টিতেই গোটা এলাকা জলে ডুবে যায়। পুরসভার জল খাওয়া যায় না।  আমার ভাইপো মাত্র সাত বছর বয়স। কিছুদিন আগে ডায়ারিয়ায় কাবু হয়ে পড়েছিল। প্রাণে মরতে মরতে বেঁচেছে। জল ভাল করে পরিষ্কার হয় না। সেখান থেকেই এই বিপত্তি।”

কামারহাটি পুরসভার প্রশাসক বিমল সাহা যদিও বলেছেন, “আমরা মৃত্যুর খবর পেয়েছি। কেন মৃত্যু হল, তা আদৌ ডায়ারিয়া কি না তা স্পষ্ট নয়। পরীক্ষা হলে বোঝা যাবে। এছাড়া জল শোধনের জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থাই নেওয়া হচ্ছে। জলে ক্লোরিন দিয়ে শোধন করা থেকে শুরু করে মাইকিং করে সচেতনতা প্রচার সবই করা হচ্ছে। আশা করি, এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ মিলবে।”

ঘটনায়, কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র বলেন, “আমি এইমাত্র খবর পেয়েছি। আমি নিজে স্পটভিজিট করব। যা যা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা সবই করা হবে। কামারহাটির বিষয়টা খুব সেন্সেটিভ। এর আগে পুরসভার জল পরীক্ষা করে ডায়ারিয়ার কোনও জীবাণু পাওয়া যায়নি। আচমকাই সংক্রমণ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ফের কেন সংক্রমণ হচ্ছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমি ইতিমধ্যেই পুরপ্রশাসক ও অন্যান্য আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। আশা করছি দ্রুত সমাধান হবে।”

উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই  আচমকা কলেরার সংক্রমণে তটস্থ হয়ে ওঠে কামারহাটি এলাকা। মৃত্যুও ঘটে কয়েকজনের। সেপ্টেম্বরের গোড়া থেকে কামারহাটিতে জলবাহিত রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পায় বলেই দাবি করেন স্থানীয়রা। মূলত, শিশু ও বৃদ্ধরাই সর্বাধিক আক্রান্ত হন। নাইসেডের নয়া রিপোর্টে জানানো হয়, ডায়ারিয়া নয়, বরং কলেরার জীবাণুই দায়ী এই সংক্রমণের নেপথ্যে। শুধু তাই নয়, জল থেকেই কলেরার জীবাণি ছড়িয়েছে বলে দাবি করে নাইসেড।

কামারহাটির এ হেন পরিস্থিতি নিয়ে একটি বিবৃতি জারি করেন স্বাস্থ্য দফতরের অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী। তিনি জানান, জেলা প্রশাসন ও পুরসভার কর্মীদের এ নিয়ে সজাগ থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে তারা সবরকম খোঁজ খবর নিচ্ছে। প্রয়োজনীয় পরামর্শ থেকে প্রাথমিক পথ্য, ওআরএসের প্যাকেট দেওয়া হচ্ছে। জলের রিজারভারগুলি পরিষ্কারের পাশাপাশি এলাকায় স্বাস্থ্য শিবিরের আয়োজন করা হচ্ছে। সকাল ছ’টা থেকে সন্ধ্যা ছ’টা পর্যন্ত মেডিক্যাল অফিসার, প্যারামেডিক্যাল কর্মীরা এলাকায় থেকে মানুষের সঙ্গে কথা বলছেন। কলেরা নিয়ন্ত্রণে একাধিক পদক্ষেপ করা হচ্ছে। ফের এভাবে মৃত্যু হওয়ায় বিপদের সিঁদুরে মেঘ দেখছেন কামারহাটির বাসিন্দারা।

আরও পড়ুন: New Digha: উপকূূলে আসন্ন ‘গুলাব’, নির্দেশ উপেক্ষা করে সমুদ্রস্নান, সলিলেই সমাধিস্থ ২!

 

Next Article