উত্তর ২৪ পরগনা: বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়ার মধ্যে চরম ঝামেলা। এরইমাঝে ঢুকে পড়েন স্থানীয় কাউন্সিলরের অনুগামীরা। অভিযোগ, জনপ্রতিনিধির ‘প্রতিনিধি’দের নাক গলানোয় সেই ঘটনা হাতাহাতিতে পৌঁছয়। তুমুল মারামারি লেগে যায় টিটাগড় পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের এমডি রোডে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কাউন্সিলর বিষ্ণু সিং। এলাকার বাসিন্দা নীতু শেঠ নামে এক মহিলার বাড়ির বাড়ির নীচে মহম্মদ ফৈয়াজ নামে এক চিকিৎসকের চেম্বার রয়েছে। অভিযোগ, ওই চিকিৎসক দিনের পর দিন ভাড়া দেন না। এরপরই বাড়ির মালিক আদালতের দ্বারস্থ হন। তিনি ভাড়াটিয়া উচ্ছেদ মামলা করেন।
অভিযোগ, ঠিক হয়েছিল ২ লক্ষ টাকা দিলে ভাড়াটিয়া ওই চিকিৎসক ঘর ছেড়ে দেবেন। কিন্তু সেই টাকা নিয়েও মহম্মদ ফৈয়াজ ঘর ছাড়েননি বলে অভিযোগ। এই নিয়ে বাড়িওয়ালার সঙ্গে ফের ঝামেলা শুরু হয়। অভিযোগ, ওই চিকিৎসকের তরফে টিটাগড় পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর বিষ্ণু সিং আলোচনায় বসবেন বলে জানান। নির্ধারিত দিনে কাউন্সিলর যাননি বলেই অভিযোগ। উল্টে প্রায় ১০০ জন ছেলে গিয়ে হাজির হন নীতু শেঠের বাড়িতে।
অভিযোগ, নীতু শেঠের উপর চড়াও হয়ে তাঁরা মারধর করেন। আরও চার মহিলাকে মারধর করা হয়। দু’জনের আঘাত গুরুতর হওয়ায় বিএন বোস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। নীতু শেঠের বক্তব্য, “চার বছর ধরে আমাদের ভাড়াটে ভাড়া দেন না। আমরা মামলাও করি। এরইমধ্যে আলোচনার মাধ্যমে ভাড়া উঠে যাওয়ার বিষয়টি ঠিক হয়। গত মাসে সেটেলমেন্টের পর ২ লক্ষ টাকা নেন ওই ডাক্তার। কিন্তু এখন ঘর ছাড়ছে না। আমরা তাঁর জিনিসপত্র বের করে দিই। এরপরই স্থানীয় কাউন্সিলরের লোকজন এসে আমাদের বাড়িতে ঢুকে আমাদের মারধর করে। মেরে আমার নাক ফাটিয়ে দিয়েছে। এক মহিলার জামা ছিঁড়ে দিয়েছে। আমাদের সঙ্গে নোংরামি করার চেষ্টা করছিল।”
নীতু দাবি করেন, “একদিকে এতগুলো ছেলে, অন্যদিকে ঘরে ছিলাম আমরা চারজন মহিলা। সকলে মিলে আমাদের উপর আক্রমণ করে।” রশ্মি শেঠ নামে এক মহিলা ওড়না সরিয়ে দেখান, হাতের কাছে, বুকের কাছে সালোয়ার ছেঁড়া। স্থানীয় কাউন্সিলর প্রায় ১০০ ছেলে পাঠিয়েছিল বলে অভিযোগ করেন তিনি। যদিও স্থানীয় কাউন্সিলর বিষ্ণু সিং বলেন, “আমি তো জানতে পেরে পুলিশকে বলেছিলাম, আপনারা ব্যাপারটা দেখুন। বাড়িভাড়া নিয়ে ঝামেলা। তারপর কী হয়েছে জানিই না। আমার বিরুদ্ধে যা বলা হচ্ছে সত্যি না। আমার ওয়ার্ড বলে হয়ত আমার নাম করে বলছে। সেরকম কিছুই না।” অন্যদিকে চিকিৎসক মহম্মদ ফৈয়াজ বলেন, “নিজে থেকে কাপড় ছিঁড়ে আমাদের কাউন্সিলরকে বদনামের চেষ্টা করছে। আর কোথাও কোনও ঝামেলা হলে এমনিই লোকজন ভিড় করে ফেলেন। পাড়ার লোকেরা তো সকলেই চলে এসেছিলেন।”