নৈহাটি : কয়েক কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। এই অভিযোগ তুলে নৈহাটি পুরসভার (Naihati Municipality) বিরুদ্ধে পড়ল পোস্টার। নৈহাটির বিভিন্ন জায়গায় এই পোস্টারগুলি পড়েছে। পোস্টারের নীচে লেখা রয়েছে সিপিআইএম। স্থানীয় বাম নেতারা স্বীকার করলেন, পোস্টারগুলি তাঁরাই দিয়েছেন। জনগণের টাকা কীভাবে তছরুপ হয়েছে, সেটা সাধারণ মানুষকে জানাতেই এই পোস্টার। পোস্টার ঘিরে অস্বস্তিতে পড়েছে শাসক দল তৃণমূল। অবশ্য দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে সাফাই দিলেন পৌরপ্রধান অশোক চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, পৌরবোর্ডের অধীনে নয়, যখন পুর প্রশাসক বসানো হয়েছিল, তখন দুর্নীতি হয়েছে। ইতিমধ্যে পুরসভায় দুর্নীতির অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত আরও চারজন পলাতক।
নৈহাটি পুরসভা পরিচালিত দুটি উৎসব ভবন এবং দুটি পার্কের কয়েক কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগ উঠছে শাসক দল পরিচালিত পৌরবোর্ডের বিরুদ্ধে। পুরসভার কয়েকজন কর্মীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্তরা নকল বিল বানিয়ে গ্রাহকদের পরিষেবার লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করত। পৌর অডিটে ধরা পড়ে বিষয়টি।
পৌরপ্রধান অশোক চট্টোপাধ্যায় দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে বলেন, ২০১৯ সালে পুরসভায় প্রশাসক বসানো হয়েছিল। সেইসময় কিছু দুর্নীতি হয়েছিল। মুন্না সাউ নামে এক কর্মী এই দুর্নীতিতে মূল অভিযুক্ত। তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতেই মুন্নাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে বলে তিনি জানান। গ্রেফতার করা হয়েছে আরও ২ জনকে। সিপিআইএম-কে আক্রমণ করে পৌরপ্রধান বলেন, “সিপিএমের মুখে দুর্নীতির অভিযোগ মানায় না। দুর্নীতির আঁতুড়ঘর হলে নৈহাটির এত উন্নয়ন হত না। পৌরবোর্ডের আমলে কোনও দুর্নীতি হয়নি।” তবে দুর্নীতিতে কোনও কাউন্সিলর জড়িত থাকলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
পৌরপ্রধান কয়েকজন কর্মীর ঘাড়ে দোষ চাপালেও সিপিএম বলছে পুরসভাই দুর্নীতির আখড়া হয়ে গিয়েছে। স্থানীয় সিপিআইএম নেতা মলয় ভট্টাচার্য বলেন, “যে যেমন পারছেন, লুটেপুটে খাচ্ছেন। টেন্ডার ছাড়া কাজ হচ্ছে। কাজ না হলেও টাকা পেমেন্ট হয়েছে।” তিনি অভিযোগ করেন, পুরসভায় একটা সিটি স্ক্যান মেশিন ছিল। ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকার বেশি দামে কেনা হয়েছিল। হঠাৎ তা খারাপ দেখিয়ে মাত্র ৫৭ লক্ষে বিক্রি করা হয়েছে।
বিজেপিরও অভিযোগ, নৈহাটি পুরসভায় অনেক দিন ধরেই দুর্নীতি চলছে। বিজেপির ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সন্দীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, তাঁরাও আন্দোলনে নামছেন।