নীলগঞ্জ: নীলগঞ্জের বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের (Blast in Duttapukur) পর ফের একবার প্রশ্ন উঠে গিয়েছে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে। কিন্তু, ঘটনার পরেও খাদিকুল ও পিংলার মতো প্রতিবাদ দেখা যাচ্ছে না নীলগঞ্জ পঞ্চায়েতের গ্রামগুলিতে। ৯ জনের মৃত্যুর পরেও সবাই চুপ কেন? কী বলছে স্থানীয় বাসিন্দা থেকে প্রশাসন? সূত্রের খবর, নীলগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে থাকা মোচপোল, নারায়নপুর, ফরিদাবাদ, কাঠুরিয়া, এই সমস্ত গ্রামের প্রায় ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ মানুষ বাজি কারবারের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত।
নীলগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নরেন্দ্রনাথ দত্ত বলছেন, “এখানের ৯০ শতাংশ মানুষই এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। সব জায়গায় নিষিদ্ধ বাজি তৈরি হচ্ছে কিনা এটা সবসময় আমাদের পক্ষে দেখা সম্ভব নয়। ওরা হয়তো কখনও ফুলঝুরি, চড়কির লাইসেন্স নিচ্ছে। কিন্তু, গোপনে কী তৈরি করছে সেটা সব সময় আমাদের পক্ষে জানা সম্ভব নয়। এর আগে দু-একবার এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। সেখানে প্রশাসন ব্যবস্থাও নিয়েছে।”
সূত্রের খবর, এলাকার যে সমস্ত মানুষ প্রত্যক্ষভাবে বাজি কারবারের সঙ্গে যুক্ত নয় তাঁরা আবার অনেকেই বাড়ি ভাড়া দেন কারবারিদের। এ বাসিন্দা তো বলছেন, ভাড়া নেওয়ার জন্য অনেকেই আসা। আর আমাদের পরিবারের অবস্থা তো বিশেষ ভাল নয়। তাই ভাড়া থেকে কিছু পয়সা যদি আসে সেই ভেবেই ভাড়া দিই। ওরা ভাড়া নেওয়ার সময় বলে কোনও ভয় নেই। শুধু ফুলঝুরি তৈরি হবে। আমার মতো অনেকেই এরকম ভাড়া দিয়েছেন।
অভিযোগ, যাঁরা বাজি কারবারের সঙ্গে কোনওভাবে যুক্ত নন, তাঁরা প্রতিবাদ করলেই মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়। অন্যদিকে কারখানাগুলির মাথায় যাঁরা আছেন তাঁরা আবার শ্রমিকদের মজুরি থেকে ৭০ শতাংশ টাকা প্রতিদিন নিয়ে নেন বলে অভিযোগ। এই উৎপাদিত বাজি তাঁরা আবার নিয়মিত বাড়িতে মজুক করেও রাখতে থাকে। পুজোর সময় বাজির চাহিদা বাড়ে তখনই তাঁরা ওই জমানো বাজি নিয়ে মাঠে নামে। এমনকি পুলিশ এই সমস্ত কারবারিদের এলাকায় অভিযান চালাতে গেলে তাঁদের বারবার ঘেরাওয়ের মুখে পড়তে হয়েছে বলে অভিযোগ। এদিকে নীলগঞ্জের মর্মান্তিক ঘটনার পরে ৩ দিন কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মূল পান্ডারা কী শেষ পর্যন্ত ধরা পড়বে? এই প্রশ্নই উঠছে নানা মহলে। সেই সঙ্গে চোখ টানছে এলাকাবাসীদের বরফ শীতল নীরবতা!