বনগাঁ: শুক্রবার সকাল থেকে অভিযান। এরপর মধ্যরাতে গ্রেফতার হন বনগাঁর দাপুটে তৃণমূল নেতা তথা প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্য়োতিপ্রিয় মল্লিক ঘনিষ্ঠ শঙ্কর আঢ্য। শ্বশুরবাড়ির থেকে সাড়ে আট লাখ টাকা উদ্ধার করেছিল ইডি। একটি আলমারি থেকে পাওয়া গিয়েছিল বান্ডিল বান্ডিল নগদ টাকা। আর শঙ্করের গ্রেফতারির পরই তাঁর বিরুদ্ধে মুখ খুললেন বনগাঁ বিজেপি সভাপতি দেবদাস মণ্ডল। তাঁর দাবি, ২০০ কোটির সম্পত্তির মালিক এই শঙ্কর। একসময় ঠেলা গাড়িতে করে চা বিক্রি করা এই তৃণমূল নেতা রাতারাতি কীভাবে কোটি টাকার মালিক হলেন সেই নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
দেবদাস মণ্ডল বলেছেন, শঙ্কর আঢ্যর সম্পত্তির উত্তরোত্তর বৃদ্ধির পিছনে হাত রয়েছে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের। বিজেপি নেতা বলেছেন, “তৃণমূলকে সামনে রেখে উনি সম্পতি বাড়িয়েছে। আর এর ভাগ খেয়েছে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও আরও এক দাপুটে নেতা।” জেলা বিজেপি সভাপতি জ্যোতিপ্রিয়র উপর তোপ দেগেই বলেছেন, “জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের হাত মাথার উপরে ছিল তাই আঙুল খুলে কলাগাছ হয়েছে।”
২০১৮ সালে নাকি শঙ্কর আঢ্য ভ্যানে করে চা বিক্রি করতেন। সে কথা তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছেন দেবদাস মণ্ডল। এর পাশাপাশি শঙ্করের কোথায়-কোথায় সম্পত্তি রয়েছে তার একটা খতিয়ানও তুলে ধরেছেন তিনি। বলেছেন, “বনগাঁ শহরের উপর ২০০ কোটির সম্পত্তি রয়েছে ওনার। দুটি সোনার দোকান, বড় গোডাউন রয়েছে, দিঘায় হোটেল আছে। কলকাতায় বাড়ি আছে আবার প্রমোটিং করছে। দুবাইতে শেয়ার কেনা আছে, দিল্লিতেও ফ্ল্যাট রয়েছে।” তিনি প্রশ্ন তুলেছেন। বলেছেন, “এই সম্পত্তি কীভাবে এল? ইডি তদন্ত করলেই দেখতে পারে ডাকু কত হাজার কোটি টাকার মালিক।গরুর ব্যবসা যাঁরা করত তাদের থেকে টাকা তুলত।”
বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা তথা এলাকায় তৃণমূলের দাপুটে নেতাকে শঙ্করকে ‘ডাকু’ নামে চেনে সবাই। শঙ্কর আঢ্যর স্ত্রী জ্যোৎস্না আঢ্যও কাউন্সিলর ছিলেন। রাজনীতির সূত্রে বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সঙ্গে তাঁদের বিশেষ ঘনিষ্ঠতা ছিল বলে শোনা যায়। কিছুদিন আগেই তাঁকে তলব করেছিল ইডি। কিন্তু হাজিরা এড়িয়ে যান তৃণমূল নেতা। নিজে যাওয়ার বদলে পাঠিয়ে দেন কিছু নথিপত্র। এরপর গভীর রাতে গ্রেফতার হন তিনি।