সন্দেশখালি: সন্দেশখালিতে শাহজাহান শেখের বাড়িতে অভিযানে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন ইডির অফিসাররা। এক তীব্র জনরোষের মধ্যে পড়তে হয়েছিল ইডির আধিকারিকদের। মাথা ফেটেছে। হাসপাতালে ভর্তি। পুলিশের কাছে ইতিমধ্যেই অভিযোগ জানিয়েছে ইডি। পাল্টা অভিযোগও এসেছে ইডির বিরুদ্ধে। গত ২৪ ঘণ্টা ধরে খবরের শিরোনামে সন্দেশখালির সরবেড়িয়া গ্রাম। গতকালের ঘটনার পর থেকে খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না শেখ শাহজাহানেরও। বিভিন্নভাবে কাঁটাছেড়া চলছে গতকালের ঘটনা নিয়ে। কিন্তু কেন এই জনরোষ তৈরি হল গতকাল? কী বলছেন এলাকায় শাহজাহানের অনুগামীরা।
সন্দেশখালির সরবেড়িয়ার মানুষজন বলছেন, তাঁরা শেখ শাহজাহানকে ‘দেবতার’ মতো দেখেন। কেউ আবার বললেন, শাহাজাহান হলেন ‘প্রকৃত সুন্দরবনের বাঘ’। শাহজাহান অনুগামীদের বক্তব্য, ‘ভগবানকে কালিমালিপ্ত করার জন্য… ভগবানের মন্দিরে এসে কালি ছেটানোর চেষ্টা করেছিল, তাই ভগবানের ভক্তরা যা করণীয় তাই করেছে।’ তাঁদের বক্তব্য, কোনও নোটিস ছাড়াই আচমকা এসে গিয়েছিলেন ইডির তদন্তকারী অফিসাররা। আর এটা নিয়েই প্রথম আপত্তি তাঁদের।
টিভি নাইন বাংলায় গতকালের ঘটনা প্রসঙ্গে মুখ খুলে তাঁরা বললেন, ‘শাহজাহান কোনও (রেশন) ডিলার নন। খাদ্য সরবরাহ দফতরের সঙ্গে কোনও যোগ নেই। হয়ত কেউ নাম বলতে পারেন। কিন্তু আইনি প্রক্রিয়ায় যদি তাঁকে নোটিস জারি করত, তখন নিশ্চয়ই আদালতে যাওয়া হত। আইনিভাবে লড়াই হত। কিন্তু কোনও নোটিস না জানিয়ে আচমকা এসে বাড়িতে হাতুড়ি দিয়ে তালা ভাঙছিল।’
উল্লেখ্য, এই এলাকাতেই শাহজাহান শেখদের পরিবারের পাশাপাশি পাঁচটি বাড়ি রয়েছে। এলাকাবাসীদের বক্তব্য, সেখানে শাহজাহানের বয়স্ক ও অসুস্থা মা আছেন। বাচ্চা আছে, কান্নাকাটি করছিল। সেই সময় গ্রামের মানুষজন এসে ইডির সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে, কেন্দ্রীয় বাহিনী লাঠিচার্জ করে বলে দাবি শাহজাহানের অনুগামীদের। তাঁদের বক্তব্য, ‘আমরা ভালবেসেই বলেছিলাম, আপনারা চলে যান। নোটিস দিয়ে যান। নিশ্চয়ই আলোচনার জায়গা আছে। নোটিস দিলে উনি পৌঁছে যাবেন আদালতে। সেখানে গিয়ে আইনি ব্যবস্থা হবে।’
কিন্তু এলাকাবাসীদের কথা না শোনায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল বলে দাবি শাহজাহানের অনুগামীদের। বললেন, ” আমাদের কথা না শোনায় এলাকার মহিলা-সহ গ্রামের সব মানুষ মিলে আন্দোলনের মাধ্যমে, ওদের চলে যেতে বাধ্য করেছি।” তবে গ্রামবাসীরা কেউ ইডির গাড়ি ভাঙচুর করেননি বলেই দাবি তাঁদের। বলছেন, “ওরা নিজেরাই ইচ্ছাকৃতভাবে ভাঙচুর করে এই বিষয়টি দেখাচ্ছে। একটা প্রমাণ দেখাক, এলাকার মানুষ ওদের গাড়ি ভেঙেছে।” এমনকী, সংবাদমাধ্যমের গাড়িও এলাকার কেউ ভাঙচুর করেছে তাঁদের চোখে পড়েনি বলেই দাবি এলাকাবাসীদের।