বরাহনগর : ‘অপরাধী’ হিসেবে চিহ্নিত করেছিল বাংলাদেশ (Bangladesh)। একাধিক খুনের মামলা ছিল তাঁর বিরুদ্ধে। কলকাতায় ধরা পড়ার পর বছর কয়েক আগে সেই ব্যক্তি বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে এসেছিলেন বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার রাতে সেই যুবকের দেহ উদ্ধার হওয়ায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পুলিশ তাঁকে নূর উন লতিফ নবি ওরফে ম্যাক্সন বলে চিহ্নিত করলেও বরানগর এলাকায় তাঁকে প্রতিবেশীরা চিনতেন তমাল রায়চৌধুরী নামে। মাস কয়েক আগে তাঁকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ (Police)। পরে জামিন পান তিনি। তিনি গ্রেফতার হওয়ার আগে পর্যন্ত প্রতিবেশীদের তাঁর অপরাধ সম্পর্কে ধারণাই ছিল না।
বরানগরের নর্দান পার্কের একটি আবাসনের বাসিন্দা ছিলেন বাংলাদেশের নাগরিক তমাল রায়চৌধুরী। অর্পিতা নামে এক মহিলার সঙ্গে সেখানে থাকতেন তিনি। তাঁকেই তমালের স্ত্রী বলে চিনতেন সবাই। স্ত্রীর সঙ্গে মাঝেমধ্যে ঝগড়া হত, এর বেশি সন্দেহজনক কোনও কাজ করতেই কেউ দেখেননি তমালকে। মাছের ব্যবসা শুরু করেছিলেন তিনি।
তাঁদের ফ্ল্যাটে পরিচারিকার কাজ করতেন লক্ষ্মী ঘোষ। তিনি জানিয়েছেন, তমালের ব্যবহার ছিল অত্যন্ত ভাল। তাঁর সঙ্গে পরিচারিকা হিসেবে ব্যবহার করতেন না তমাল বা তাঁর স্ত্রী, ঘরের লোকের মতোই দেখতেন তাঁকে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে তমালকে ওই ফ্ল্যাট থেকেই গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। সেদিন রীতিমতো অবাক হয়ে গিয়েছিলেন আবাসনের বাসিন্দারা। আর মঙ্গলবার তাঁর রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় আরও হতবাক হয়ে গিয়েছেন তাঁরা।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে খুন, জালিয়াতি সহ অন্তত ২২টি মামলা রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। ২০১৭ সালে তিনি বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতে এসেছিলেন বলে অভিযোগ। বাংলাদেশে তিনি ম্যাক্সন বলেই পরিচিত ছিলেন। মঙ্গলবার হরিদেবপুরের একটি আবাসন থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। মতিলাল গুপ্ত রোডের ধারে একটি বহুতল থেকে গলায় ওড়ান জড়ানো দেহ উদ্ধার হয় তাঁর। এপ্রিল মাসে ছাড়া পাওয়ার পর থেকে অর্পিতা নামে ওই মহিলার সঙ্গেই ভাড়া থাকতেন তমাল। পুলিশ জানতে পেরেছে, কিছুদিন ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন ওই যুবক। মঙ্গলবার যখন বাড়িতে কেউ ছিলেন না সেই সময় তিনি আত্মঘাতী হন বলে অনুমান পুলিশের। ঘটনার তদন্ত চলছে। যুবক মাদকাসক্ত ছিল বলেও জানতে পেরেছে পুলিশ।