বারাসত: বিস্ফোরণে প্রায় ২৪ ঘণ্টা পার। থমথমে নীলগঞ্জ। বাজি বিপর্যয়ে কমপক্ষে ৮ প্রাণের বলি। এখনও ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিন্নভিন্ন দেহাংশ। ছড়িয়ে ছিটিয়ে ভয়াবহ বিস্ফোরণের চিহ্ন। উড়েছে ঘরবাড়ি। দৃশ্যত যেন কোনও ভূমিকম্পের ধ্বংসস্তূপ। আর তার মধ্যেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে আটকে থাকা ঝলসানো দেহাংশ। সোমবার সকালেই বিস্ফোরণ স্থলের পিছন থেকে উদ্ধার হয়েছে কাটা মুণ্ড। ঝলসে যাওয়া একটা হাত, হাতের আঙুল। গা ঘিনঘিনে শিউরে ওঠার মতো দৃশ্য। সকাল থেকে ফের চলছে দেহ উদ্ধারের কাজ। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে।
সোমবার সকাল থেকে পাঁচশো মিটার দূরত্বের মধ্যে তিনটি দেহাংশ উদ্ধার হয়েছে। এক জায়গা থেকে পায়ের পাতা উদ্ধার হয়েছে, এক জায়গায় ডান হাতের কনুই থেকে কাটা অংশ, আরেকটি দেহাংশ পুকুরের মধ্যে ভাসতে দেখা যাচ্ছে। ধ্বংসস্তূপের মধ্যেও বেশ কিছু দেহাংশ থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে জঙ্গল পরিষ্কার করার কাজ। তদন্তকারীরা মনে করছেন, ঝোপের মধ্যেও দেহের কাটা অংশ পড়ে গিয়ে থাকতে পারে। জঙ্গলের আড়ালেই ছিল বোমা তৈরির মূল কারখানা। তারপর সেখান থেকে নিয়ে এসে বাড়ির সিঁড়ির নীচে মজুত রাখা হত। বোমা ছাদেও রাখা হত। জানা যাচ্ছে, সেই আলু বোমা ফেটেই ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ। বাড়িতে মজুত ছিল রাসায়নিক। সেই থেকেই বিস্ফোরণ অভিঘাত এতটাই ভয়ঙ্কর।
নীলগঞ্জ জুড়ে শুরু হয়েছে ব্যপক ধরপাকড়। নীলগঞ্জ থেকে ২০০ কেজি অবৈধ বাজি উদ্ধার হয়েছে। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় শফিকুল ইসলাম নামে এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মূল অভিযুক্ত কেরামতের পার্টনার বলে জানা গিয়েছে। বেশ কয়েকটি ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ।ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৮৬, বিস্ফোরক জাতীয় পদার্থ মজুত করার ক্ষেত্রে গাফিলতি, ৩০৮ অনিচ্ছাকৃত খুন, ৩০৪ অনিচ্ছাকৃত মৃত্যু,এক্সপ্লোসিভ অ্যাক্ট ৯ বি, নিয়ম লঙ্ঘন করে বিস্ফোরক মজুত রাখার অভিযোগে, ২৪/২৬ পশ্চিমবঙ্গ দমকল আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে।
এদিকে হাসপাতালে এখন দেহগুলি শনাক্তকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মৃতদের পরিজনদের ভিড় হাসপাতালে। পরপর কারখানা, গুদামে বারুদের স্তূপ এখনও নীলগঞ্জে। যখন তখন ফের অঘটনের শঙ্কা মোচপোলে।