উত্তর ২৪ পরগনা: গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের ভাই তৃণমূল কর্মীকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ। ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে চাঁপাতলার গোসাইপুর বাজারে। নিহত তৃণমূল কর্মীর নাম মিজান রেজা চৌধুরী। ঘটনায় এলাকায় চাপা উত্তেজনা রয়েছে। পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়িতে ভিড় জমিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব ও গ্রামবাসীরা। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে দেগঙ্গা থানার পুলিশ। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত গত ১৮ নভেম্বর। সেই রাতে চাঁপাতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান হুমায়ন রেজা চৌধুরীর ভাই মিজান রেজা চৌধুরী বাড়ি ফিরছিলেন। অভিযোগ, সেই সময় রাস্তায় তাঁকে কয়েকজন পথ আগলে ধরেন। এক্ষেত্রে নাম উঠে আসছে স্থানীয় গোসাইপুর এলাকার বাসিন্দা শুকুর আলি ওরফে আমজাদ আলির। অভিযোগ, পঞ্চায়েত প্রধানের ভাইয়ের সঙ্গে কিছু বিষয় নিয়ে ঝামেলা শুরু হয়। তাঁকে উদ্দেশ করে গালিগালাজ করতে থাকেন বলে অভিযোগ। এই নিয়ে কথায় কথায় অশান্তি বাড়ে। তখনই তাঁর ওপর ছুরি নিয়ে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ।
পঞ্চায়েত প্রধানের ভাই মিজান রেজা চৌধুরী প্রতিবাদ করতে গেলে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। অভিযোগ, সেই সময় আমজাদ আলি ধরাল ছুরি নিয়ে মিজান রেজা চৌধুরীর পেটে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় মিজান রেজা চৌধুরীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদিকে, অভিযুক্ত আমজাদ আলিও আক্রান্ত হন। মিজান রেজা চৌধুরীকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার প্রথমে হাড়োয়ার গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হওয়ায় চিকিৎসকরা তাঁকে বারাসত জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। বারাসাত হাসপাতালে তাঁর অবস্থা সঙ্কটজনক হয়। ক্ষতস্থানে সংক্রমণ তৈরি হয়। এরপর কলকাতার মুকুন্দপুরে এক বেসরকারি হাসপাতালে রবিবার রাতে অস্ত্রোপচার করা হয়। অস্ত্রোপচারের পরই মৃত্যু হয় মিজান চৌধুরীর।
এলাকায় যাতে শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত না হয়, রবিবার রাত থেকেই পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে গোসাইপুর বাজারে। পরিবার দাবি, মিজান চৌধুরীকে খুন করা হয়েছে। অভিযুক্ত আমজাদ আলি ঘটনার পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন। তাঁর খোঁজে দেগঙ্গা থানার পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে।
সোমবার সকালে দেগঙ্গার এসডিপিও সৌমজিৎ বড়ুয়া বিশাল বাহিনী নিয়ে পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়িতে যান। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
এই ঘটনায় উত্তর ২৪ পরগনার জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ তৃণমূল নেতা এ কে এম ফারাদ বলেন, “এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। আমরা সবাই শোকার্ত। পুলিশ তদন্ত করছে। দল মূল্যায়ন করবে।” এই ঘটনায় বিজেপির বারাসত জেলা সভাপতি তাপস মিত্র বলেন, ” ওদের দলে তোলা নিয়ে ঝামেলা হচ্ছে। যত নির্বাচন এগিয়ে আসবে, এই জিনিস বাড়বে, ওই দলে কোনও নীতি নেই।”