বারাসত: শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। বাড়ির লোক হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন। কিন্তু নেশা যে সেখানেও পিছু ছাড়েনি। হাসপাতালে বেডে তখন তাঁর মুখে মাস্ক। নেশা চড়ে যায় মারাত্মক! অক্সিজেন মাস্ক মুখ থেকে নামিয়ে সিগারেটটা ধরিয়েই ফেলেন। সুখের এক টান দিতেই সর্বনাশ। ঝলসে গেল মুখ। হাবড়া হাসপাতালে ভয়ঙ্কর ঘটনা। অরুণা অধিকারী নামে ওই গৃহবধূর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁকে বারাসত স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর অবস্থা দেখে রীতিমতো শঙ্কিত হয়ে পড়েন চিকিৎসকরাও।
হাসপাতাল ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ঠান্ডায় শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন হাবড়া হাটথুবা ঘোষপাড়া এলাকার মাঝবয়সি গৃহবধূ অরুণা অধিকারী। রবিবার গভীর রাতে হাবরা হাসপাতালে বেডে বসে অক্সিজেন মাস্ক পরেই সিগারেট ধরিয়ে ফেলেন তিনি। বাকি রোগীদের বয়ান অনুযায়ী, সিগারেটের এক টান মারতেই ধপ্ করে জ্বলে ওঠে আগুন। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঝলসে যায় ওই গৃহবধূর মুখ।
আগুন দেখে চিৎকার চেঁচামেচি করতে থাকেন বাকি রোগীরা। হাসপাতালের কর্মীরা ছুটে আসেন। নার্সও এসে গোটা বিষয়টি দেখে ঘাবড়ে যান। মহিলার অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় সোমবারই তাঁকে বারাসত হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
কিন্তু এই ঘটনায় সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে উঠছে একাধিক প্রশ্ন। হাসপাতাল বেডে ধূমপান করার জিনিস বা দেশলাই পৌঁছল কীভাবে? একজন রোগী হাসপাতালের বেডে বসে কীভাবে ধূমপান করতে পারেন! কর্তব্যরত নার্স চিকিৎসকরা কোথায় ছিলেন, তা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠছে।
হাবড়া পৌরসভার চেয়ারম্যান তথা রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান নারায়ণ সাহা বলেন, “সম্পূর্ণ ঘটনা শুনেছি। খোঁজখবর নেওয়া হবে কীভাবে হাসপাতালের ভেতরে ধূমপান করার জিনিসপত্র পৌঁছল, তাও তদন্ত করে দেখা হবে।” তবে এই ঘটনা নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে অন্যান্য রোগীরা। হাবড়া হাসপাতালের সুপার বিবেকানন্দ বিশ্বাস বলেন, “বাড়ির লোকের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। ভিজিটিং আওয়ার্সে তো বাড়ির লোক আসে দেখা করতে। সবটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”