বসিরহাট: নয়া রোগে বসিরহাটে মৃত্যু তিন জনের। ছড়াল আতঙ্ক। রক্তে বিষক্রিয়া বা সেপসিস নামক রোগে ইতিমধ্যে মৃত্যু হয়েছে বসিরহাটের তিন জনের। বসিরহাটের বাদুড়িয়া ব্লকের কাটিয়াহাট গ্রামের তারাভান বিবি গত ১৪ই সেপ্টেম্বর রক্ত জমা সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে তিনি বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি হন। তার কিছুক্ষণ পর তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর কারণ হিসাবে উল্লেখ করা হয় সেপসিস।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে বসিরহাটের সন্দেশখালি ও হাড়োয়ায় আরও দুই বাসিন্দার মৃত্যু হয় ওই একই রোগে। একজন হলেন সন্দেশখালি ২নং ব্লকের জেলিয়াখালির বাসিন্দা রহিলা বিবি। অন্যজন হাড়োয়া ব্লকের খাসবালান্দা গ্রাম পঞ্চায়েতের খাড়ুবালার বাসিন্দা রহমান মোল্লা। এই তিন জনেরই মৃত্যু হয়েছে একই বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে।
কী এই সেপসিস? সেপসিস হল একটি প্রাণঘাতী রোগ। যার সংক্রমণ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার কমার কারণে ঘটে। এমন কিছু সময় আছে যখন সংক্রমণের প্রতিক্রিয়া হিসাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় এবং শরীরের কোষ গুলির ক্ষতি করে। এই সংক্রমণ নাটকীয়ভাবে রক্তচাপ কমাতে পারে এবং অঙ্গ ব্যর্থতা এবং মৃত্যুও হতে পারে। যদিও সেপসিস রোগ অতি সংক্রামক নয় এবং ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে বা শারীরিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে না।
বরং তা রক্তের মাধ্যমে শরীরের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। রোগের কারণ গুলি হল, যে কোনও ধরনের ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাল বা ছত্রাক জনিত ক্ষতের কারণে সেপসিস হতে পারে। সেপসিসের সবচেয়ে সাধারণ কারণগুলির মধ্যে সংক্রমণ যেমন নিউমোনিয়া (ফুসফুসের সংক্রমণ), কিডনি, মূত্রাশয় এবং মূত্রতন্ত্রের, পাচনতন্ত্রের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
সেপসিসের পরে, রোগীকে ধীরে ধীরে চলাফেরা করতে এবং নিজের যত্ন নিতে সহায়তা করে হাসপাতালে পুনরুদ্ধারের পর্যায় শুরু হয়। এতে স্নান করা, বসা, দাঁড়ানো, হাঁটাচলা সবই আস্তে আস্তে করতে হয়। করোনা পরবর্তীকালে ডেঙ্গির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যদি এই রোগ বাড়তে থাকে। তবে তা যথেষ্টই উদ্বেগের কারণ হতে পারে স্বাস্থ্য দফতরের কাছে।
সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের এক বিশেষজ্ঞ বলেন, “কোনও ব্যাকটেরিয়ার কারণেই হতে পারে। রক্ত চলাচলের ক্ষমতা কমে যায়। অঙ্গপ্রত্যঙ্গে অক্সিজেন কম পৌঁছয়। ফলে কার্যক্ষমতা কমে যায়। সেখান থেকেই এই সমস্যা। এটা বিভিন্ন কারণে হতে পারে।”