উত্তর ২৪ পরগনা: বঙ্গ বিজেপির (Bengal BJP) অন্দরে ইদানিং হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ ‘লেফট’ করার একটা ব্যাপক প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পান থেকে চুন খসলেই নেতারা ভার্চুয়াল গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন বলেই মত রাজনৈতিক মহলের। শনিবারই বিজেপির পাঁচ বিধায়ক হোয়াটস্যাপ গ্রুপ লেফট করেন বলে সূত্রের খবর। গ্রুপ লেফটের তালিকায় ছিলেন প্রাক্তন বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত (Shilbhadra Dutta)। যদিও, রবিবার সকালে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, আপাতত বিজেপিতেই রয়েছেন তিনি।
কেন গ্রুপ লেফট করেছিলেন শীলভদ্র? প্রশ্নের উত্তরে খোদ বিজেপি নেতা জানান, তিনি কোনওভাবেই দলের হোয়াটস্যাপ গ্রুপ থেকে ‘লেফট’ হননি। কোনওভাবে ভুল করে অমনটা হয়েছিল। তবে তিনি এখন দলের গ্রুপে রয়েছেন। শীলভদ্রের নিজের কথায়, “আমি কোনও হোয়াটস্যাপ গ্রুপ থেকে বের হইনি। কোনও কারণে হয়ত এমনটা হয়ে গিয়েছে।” তাঁর আরও সংযোজন, “বিজেপি ছাড়ব কেন! আমি দলটা মন থেকে ভালবেসে করি। বিজেপি ছাড়লে অন্য কোনও দলে কোনওদিন যাব না। ওরা আমাকে টিকিট দিয়েছিল। বিজেপিতে ছিলাম, আছি, থাকব।”
প্রসঙ্গত,বঙ্গ বিজেপির রাজ্য কমিটির তালিকা প্রকাশের পর থেকেই দলের নেতাদের গ্রুপ লেফটের প্রবণতা দেখা গিয়েছে। নতুন তালিকা প্রকাশের পরেই একটি টুইট করেন সায়ন্তন বসু। তিনি লেখেন, “আমি বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। দিলীপ ঘোষ ও সুকান্ত মজুমদারের প্রতিও আমি কৃতজ্ঞ। শেষ ছ’বছর ধরে আমি দলের প্রতি যে দায়িত্ব পালন করে, আমাকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। আমি আশা করছি, আগামী দিনে নতুন টিম দলকে নতুন জায়গায় পৌঁছে দেব।” এরপরই বিজেপির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে বেরিয়ে যান সায়ন্তন বসু। পরে এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এটাই তো স্বাভাবিক। রাজ্য কমিটিতে না থাকলে, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে থাকাটা তো নৈতিক নয়। তাই ওই গ্রুপ থেকে বেরিয়ে গিয়েছি।”
তবে শুধু সায়ন্তন নন, সূত্রের খবর, গ্রুপ লেফটের তালিকায় রয়েছেন, অশোক কীর্তনিয়া, মুকুটমণি অধিকারী, সুব্রত ঠাকুর, অসীম সরকার এবং অম্বিকা রায়। পদ্ম শিবিরের অন্দরের খবর, সদ্য গঠিন বিজেপির রাজ্য কমিটিতে সে অর্থে মতুয়া-প্রতিনিধির জায়গা হয়নি। এ নিয়েই ক্ষোভ বাড়ছিল এই সম্প্রদায়ের বিজেপি কর্মীদের মধ্যে। আর তারপরেই গ্রুপ ছাড়েন ওই পাঁচ বিধায়ক। এছাড়াও রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়ও গ্রুপ লেফট করেন বলে খবর। যদিও এ নিয়ে কেউই কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। তবে, রবিবার সকালে শীলভদ্র স্পষ্টই জানান, তিনি বিজেপিতেই থাকতে চান।
উল্লেখ্য, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের টিকিটে ভোটে দাঁড়াবেন না বলে জানিয়েছিলেন শীলভদ্র। তারপরই সকল জল্পনা সত্যি করে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখে দলের সদস্যপদ থেকে ইস্তফাও দেন তিনি। দল ছাড়লেও যদিও তখন তখনই বিধায়ক পদ ছাড়েননি তিনি। পরে, অবশ্য বিজেপির তরফে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেও পরাজিত হন প্রবীণ নেতা।