উত্তর ২৪ পরগনা: ভোর রাত্রে ভাটপাড়ায় বিজেপির প্রার্থীর (BJP Candidate) বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণ। ভাটপাড়া পৌরসভার ২৮ নং ওয়ার্ড এ বিজেপির প্রাথী’ সুমিত্রা মণ্ডলের বাড়িতে বোমা ছোড়ে দুষ্কৃতীরা বলে অভিযোগ। পরপর দুটি বোমা ছুড়ে পালায় তারা। একটি বোমার বিস্ফোরণ হয়নি। সেটি জগদ্দল থানার পুলিশ এসে উদ্ধার করে। আচমকা বোমাবাজির ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এই ওয়ার্ডেই , বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার দিন বিজেপির বুথ সভাপতি তারক মণ্ডলের মা শোভারানি মণ্ডল গণপিটুনিতে মারা যান বলে অভিযোগ ওঠে। ভোট পরবর্তী হিংসা তদন্তে নামে সিবিআই (CBI)। শোভারানিরই পূত্রবধূ সুমিত্রা।
সুমিত্রা দেবী ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপির প্রার্থী। তাঁর কথায়, “রাতে আমরা সকলে ঘুমিয়ে ছিলাম। আচমকা একটা দুম করে আওয়াজ! পরে আরও একটা! বুঝতে পারলাম বোমা পরেছে। তৃণমূলের লোকেরাই বোমা ফেলেছে। যাতে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিই। সেইজন্য়েই এই হামলা করা হয়েছে। একটা বোমা পুলিশ এসে উদ্ধার করে নিয়ে গিয়েছে। আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি।”
কিছুদিন আগেই ভাটপাড়ায় জগদ্দল ঘাটে বোমাবাজির ঘটনায় এক যুবকের মৃত্যু ঘটেছিল। সেই ঘটনায় তদন্তে নামে এনআইএ। ‘অর্জুন গড়ে’ একের পর এক অশান্তিতে বিজেপির সাংসদের দিকেই আঙুল তুলেছিল তৃণমূল। এ বার ফের বোমাবাজির ঘটনায় স্পষ্ট শান্তি ফেরেনি ভাটপাড়ায়। মাঝেমধ্যেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে সংবেদনশীল বলে পরিচিত এই এলাকা। যদিও, গোটা ঘটনায় তৃণমূল সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তৃণমূলের দাবি, বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে।
বিজেপি প্রার্থী সুমিত্রা হিংসা তদন্তে মৃত শোভারানি মণ্ডলের পুত্রবধূ। নিজের শাশুড়ি মায়ের মৃত্যুর ঘটনার পরেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে নিজ ওয়ার্ডেই প্রার্থীপদ পেয়েছেন সুমিত্রা।
২ মে ভোট পরবর্তী হিংসার বলি হন শ্যামনগরের রাউতা বিআরএক কলোনির বাসিন্দা শোভারানি মণ্ডল। তাঁর ছেলে ১৭১ নম্বর বুথের সভাপতি ছিলেন। ভোট পরবর্তী পর্যায়ে তাঁর ওপর তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে। ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হন মা শোভারানি। বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে তাঁকে খুন করা হয়। ঘটনায় প্রাথমিক পর্যায়ে তদন্ত করে পুলিশ। এরপর হিংসা তদন্তের দায়ভার গিয়ে পড়ে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার উপর।
গত বছর সেপ্টেম্বরে বারাকপুর আদালতে আত্মসমর্পণ করে রতন হালদার নামে এক অভিযুক্ত। এই ঘটনায় অক্টোবরে মোট ৮ জনকে গ্রেফতার করে সিবিআই। অক্টোবরে সিবিআই-এর পক্ষ থেকে ৮ জনকে নোটিস পাঠানো হয়েছিল। নোটিসের প্রেক্ষিতে তারা সল্টলেক সিজিও কমপ্লেক্সে দেখা করে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। বয়ানে বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে অসঙ্গতি ধরা পড়ে। তখনই ৮ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। যদিও এই হিংসা মামলায় অভিযুক্ত আরও দুইজন মহিলা এখনও অধরা। তাঁদের পাকড়াও করতে ইতিমধ্যেই ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে সিবিআই।
আরও পড়ুন: ‘দুর্ভাগ্যের বিদায়, শেষজীবনেও রাজনীতির শিকার হলেন সন্ধ্যা’