উত্তর ২৪ পরগনা: ভোটপর্ব মিটলেও সন্ত্রাসে (Post Poll Violence) অব্যাহতি নেই। দফায় দফায় রাজ্যে ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস খতিয়ে দেখতে কেন্দ্র থেকে আসছে বিশেষ প্রতিনিধি দল। শাসক-বিরোধী সংঘাত এতদূর যে জল গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। খোদ রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় পর্যন্ত ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে টুইট যুদ্ধে জড়িয়েছেন। ফের একবার সন্ত্রাসের জেরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল ভাটপাড়া।
বুধবার গভীর রাতে ভাটপাড়ার বিজেপি কর্মী রাজু লাহিড়ীর বাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজি করে বেশ কিছু দুষ্কৃতী। ভোটের পর থেকেই রাজু বাড়ি ছাড়া। বুধবার রাতে ঘরে ছিলেন রাজুর বৃদ্ধা মা দময়ন্তী লাহিড়ী, স্ত্রী সুনীতা লাহিড়ী এবং দুই শিশু সন্তান। তার মধ্য়ে একটি সন্তান প্রতিবন্ধী। অভিযোগ, বুধবার রাতে রাজুর বাড়ির সামনে ব্যাপক বোমাবাজি চলে। বৃহস্পতিবার সকালে, ঘরের দরজা খুলে বাইরে আসতেই দরজার সামনে বোমা আবিষ্কার করেন দময়ন্তী ও সুনীতা।
আতঙ্কিত দময়ন্তীর কথায়, “আমরা অনেক বছর এখানে রয়েছি। কোনওদিন এমন দেখিনি। ভোর চারটের সময়ে দরজা খুলে দেখি পায়ের কাছে বোমা পড়ে রয়েছে। বাড়িতে আমার ছেলে নেই। ও বিজেপি করে বলেই ইচ্ছে করে বোমা রেখে দিয়ে গিয়েছে। ঈশ্বরের কৃপায় প্রাণে মরতে মরতে বেঁচেছি।” রাজুর স্ত্রী সুনীতা বলেন, “সারারাত ধরে বোমাবাজি চলেছে। কে বা কারা করেছে জানিনা। ভোটের পর থেকেই তো এখানে থাকতাম না। তৃণমূলের নেতাদের বলে কয়ে এখানে এসেছি। আমার স্বামী এখনও বাড়ি ফিরতে পারেননি। আমরা কখনও এমন ভয়ানক পরিস্থিতির মধ্যs পড়িনি।”
বিজেপির তরফে যদিও অভিযোগ তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এই কাজ করেছে। পাল্টা শাসক শিবিরের দাবি, ভোটের পর রাজুর পরিবারের পাশে বিজেপি নেতৃবৃন্দকে পাওয়া যায়নি। বরং, তৃণমূলের নেতারাই তাঁদের আশ্বাস দিয়ে ফিরিয়ে আনেন। স্থানীয় তৃণমূল নেতার কথায়, “আমরা খবর পেয়েছি। পুলিশকেও জানিয়েছি। বিজেপির ব্যক্তিগত সংঘর্ষের জেরে এই হামলা। তবে আমরা রাজুর পরিবারের পাশে আছি। ওদের যা যা সাহায্য দরকার তা সবই আমরা করব।”
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই ভাটপাড়ার পরিত্যক্ত রেল কোয়ার্টার থেকে বস্তাভর্তি বোমা উদ্ধার হয়েছিল। কে বা কারা সেই বোমা রেখেছিল তা জানা যায়নি। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে থানার সংখ্যা বাড়ানোর জন্য নবান্নে ইতিমধ্যেই চিঠি দিয়েছে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট।
আরও পড়ুন: অধীরের গড়েই ‘দুর্দিন’ কংগ্রেসের, মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদে সদস্যপদ বাতিল ২ তৃণমূল প্রাক্তনীর